আল-বারাকা ইসলামী ব্যাংকে অর্থ জমা রাখার হুকুম

প্রশ্ন আমি একটি কোম্পানীর কয়েকটি একাউন্ট পরিচালনা করি। কয়েকটি সুদী ব্যাংকে কোম্পানীটির একাউন্ট রয়েছে। উল্লেখ্য, একাউন্ট হোল্ডারেরা শুধু কারেন্ট একাউন্টই খুলে থাকে এবং তারা সুদ গ্রহণ করে না। এ সকল অলস অর্থ আল-বারাকার মত একটি ইসলামী ব্যাংকে রাখা কি উত্তম নয়; যেখান থেকে লাভ পাওয়া যাবে। যদি সেটা সম্ভবপর হয় তাহলে এই লাভ কি আয়কর…

প্রশ্ন

আমি একটি কোম্পানীর কয়েকটি একাউন্ট পরিচালনা করি। কয়েকটি সুদী ব্যাংকে কোম্পানীটির একাউন্ট রয়েছে। উল্লেখ্য, একাউন্ট হোল্ডারেরা শুধু কারেন্ট একাউন্টই খুলে থাকে এবং তারা সুদ গ্রহণ করে না। এ সকল অলস অর্থ আল-বারাকার মত একটি ইসলামী ব্যাংকে রাখা কি উত্তম নয়; যেখান থেকে লাভ পাওয়া যাবে। যদি সেটা সম্ভবপর হয় তাহলে এই লাভ কি আয়কর ও শুল্ক প্রদানে কিংবা এ জাতীয় অন্য খাতে ব্যবহার করা যাবে? নাকি যে কোন খাতেই ব্যবহার করা যাবে?

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

নিছক অর্থ সংরক্ষণ করার প্রয়োজন ছাড়া সুদী ব্যাংকে অর্থ জমা রাখা হারাম। সে জন্য কেবল (সুদী ব্যাংকের) কারেন্ট একাউন্টে অর্থ জমা রাখার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। সুদী ব্যাংকের সঞ্চয়ী একাউন্টে অর্থ জমা রাখা জায়েয নয়; এমনকি সেটা যদি সুদ গ্রহণ না করে হয় তবুও। কেননা সঞ্চয়ী একাউন্টে অর্থ জমা রাখার অর্থ হল: ব্যাংকে সুদভিত্তিক ঋণ দেওয়া। কারেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে এমনটি হয় না। কেননা সেটা যদিও ব্যাংকের জন্য সহযোগিতা কিন্তু এতে জমাকারী ব্যাংকের সাথে সুদী চুক্তিতে আবদ্ধ হন না।

স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে (১৩/৩৪৬) এসেছে:

“মুদ্রা ও এ জাতীয় অন্য কিছু সুদী ব্যাংকে, সুদী প্রতিষ্ঠানে জমা রাখা জায়েয নাই। সে জমা রাখাটা সুদভিত্তিক হোক কিংবা সুদ ছাড়া হোক। যেহেতু এর মধ্যে গুনাহ ও সীমা লঙ্ঘনের কাজে সহযোগিতা পাওয়া যায়। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “তোমরা পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করো না”। তবে যদি চুরি হয়ে যাওয়া, ছিনতাই হয়ে যাওয়া বা এমন অন্য কিছুর মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়ার আশংকা করে সেক্ষেত্রে অর্থ সংরক্ষণার্থে সুদমুক্তভাবে সুদী ব্যাংকে বা সুদী প্রতিষ্ঠানে জমা রাখার অবকাশ দেওয়া হবে। যেহেতু এর মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত ছোট গুনাহতে লিপ্ত হওয়া হবে।[সমাপ্ত]

দুই:

যে ব্যাংকগুলোর লেনদেন নিখুঁতভাবে শরিয়াভিত্তিক পরিচালিত হয় সে সকল ব্যাংকে বিনিয়োগ করা জায়েয। এ ধরণের লেনদেনের লভ্যাংশ দিয়ে যে কোন খাতে উপকৃত হতে কোন অসুবিধা নাই।

প্রশ্নকারীর দেশের উল্লেখিত ব্যাংকটি এর অর্থের বড় একটি অংশ দিয়ে সুদভিত্তিক সরকারী বন্ড খরিদ করে থাকে; যেমনটি ব্যাংকটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনের সূত্রে জানা যায়। অতএব, উল্লেখিত ব্যাংকে বিনিয়োগ করা জায়েয হবে না। প্রয়োজন হলে কেবল কারেন্ট একাউন্টে অর্থ জমা রাখা যাবে। আর যদি এর চেয়ে ভাল ও পরিচ্ছন্ন ব্যাংকে রাখা যায় তাহলে সেটাই উত্তম।

আরও জানতে দেখুন: 126073 নং প্রশ্নোত্তর।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.