কেমো থেরাপি নেয়ার কারনে যে ব্যক্তি রমযানের রোযা রাখতে পারেনি; তার কী করণীয়?

প্রশ্ন বর্তমানে আমি লিভার ক্যান্সারের কারণে কেমো থেরাপি নিচ্ছি। এ চিকিৎসাটা হচ্ছে দৈনিক কিছু ট্যাবলেট সেবন, রগের মধ্যে ইনজেকশন দেয়া। কেমো থেরাপির প্রেক্ষিতে আমার স্বাস্থ্যের সার্বিক যে দুর্বলতা সে কারণে এবং লাগাতরভাবে তরল জিনিস খাওয়ার প্রয়োজন থেকে তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক আমাকে রোযা না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। এ চিকিৎসাটি ছয়মাস চলবে। এরপর স্বাস্থ্যের অবস্থা মূল্যায়ন করা হবে।…

প্রশ্ন

বর্তমানে আমি লিভার ক্যান্সারের কারণে কেমো থেরাপি নিচ্ছি। এ চিকিৎসাটা হচ্ছে দৈনিক কিছু ট্যাবলেট সেবন, রগের মধ্যে ইনজেকশন দেয়া। কেমো থেরাপির প্রেক্ষিতে আমার স্বাস্থ্যের সার্বিক যে দুর্বলতা সে কারণে এবং লাগাতরভাবে তরল জিনিস খাওয়ার প্রয়োজন থেকে তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক আমাকে রোযা না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। এ চিকিৎসাটি ছয়মাস চলবে। এরপর স্বাস্থ্যের অবস্থা মূল্যায়ন করা হবে। চিকিৎসাটা কতটুকু কার্যকরী হচ্ছে সেটা জানা হবে। হতে পারে চিকিৎসার মেয়াদ আরও দুইমাস বাড়তে পারে। কোন উন্নতি দেখা না গেলে অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা হতে পারে। যেমন- রেডিয়েশন থেরাপি বা সার্জিকাল ইন্টারভেনশন। দয়া করে, যে মাসে আমি রোযা রাখতে পারিনি এর জন্য আমার উপর কী ওয়াজিব সেটা জানাবেন? মসজিদে যেতে না পারায় আমি যদি বাসায় তারাবীর নামায পড়ি তাহলে কি কিয়ামুল লাইল এর সওয়াব পাব? শারীরিক দুর্বলতার কারণে কিয়ামুল লাইল পালন করতে না পারলে আমি কী করব? পরবর্তী দিন কি আমি এ নামাযের কাযা পালন করব?

বর্তমানে আমি লিভার ক্যান্সারের কারণে কেমো থেরাপি নিচ্ছি। এ চিকিৎসাটা হচ্ছে দৈনিক কিছু ট্যাবলেট সেবন, রগের মধ্যে ইনজেকশন দেয়া। কেমো থেরাপির প্রেক্ষিতে আমার স্বাস্থ্যের সার্বিক যে দুর্বলতা সে কারণে এবং লাগাতরভাবে তরল জিনিস খাওয়ার প্রয়োজন থেকে তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক আমাকে রোযা না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। এ চিকিৎসাটি ছয়মাস চলবে। এরপর স্বাস্থ্যের অবস্থা মূল্যায়ন করা হবে। চিকিৎসাটা কতটুকু কার্যকরী হচ্ছে সেটা জানা হবে। হতে পারে চিকিৎসার মেয়াদ আরও দুইমাস বাড়তে পারে। কোন উন্নতি দেখা না গেলে অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা হতে পারে। যেমন- রেডিয়েশন থেরাপি বা সার্জিকাল ইন্টারভেনশন। দয়া করে, যে মাসে আমি রোযা রাখতে পারিনি এর জন্য আমার উপর কী ওয়াজিব সেটা জানাবেন? মসজিদে যেতে না পারায় আমি যদি বাসায় তারাবীর নামায পড়ি তাহলে কি কিয়ামুল লাইল এর সওয়াব পাব? শারীরিক দুর্বলতার কারণে কিয়ামুল লাইল পালন করতে না পারলে আমি কী করব? পরবর্তী দিন কি আমি এ নামাযের কাযা পালন করব?

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

আমরা আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করছি তিনি যেন আপনাকে নিরাময় করে দেন, সুস্থ করে দেন।

দুই:

রোগের কারণে রমযান মাসের রোযা না রাখতে কোন অসুবিধা নেই। এরপর আপনি যদি রোযা রাখতে সক্ষম হন তাহলে এ মাসের রোযা কাযা পালন করবেন। আর সক্ষম না হলে আপনি প্রতিদিনের বদলে একজন করে মিসকীনকে খাওয়াবেন।

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:

“অক্ষম ব্যক্তির উপর রোযা ফরয নয়। দলিল হচ্ছে আল্লাহ্‌র বাণী: “আর কেউ অসুস্থ থাকলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য দিনগুলোতে সংখ্যা পূরণ করবে”।[সূরা বাক্বারা, ২:১৮৫]

তবে গবেষণার মাধ্যমে এটা পরিষ্কার যে, অক্ষমতা দুই প্রকার: সাময়িক অক্ষমতা ও স্থায়ী অক্ষমতা। সাময়িক অক্ষমতা হল: যা দূর হওয়ার আশা রয়েছে। আয়াতে সে অক্ষমতার কথায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, অক্ষম ব্যক্তির অক্ষমতা দূর হলে সে রোযাগুলো কাযা করবে। যেহেতু আল্লাহ্‌ বলেছেন: “সে অন্য দিনগুলোতে সংখ্যা পূরণ করবে” । আর স্থায়ী অক্ষমতা হল যা দূর হওয়ার আশা নেই। এমন ব্যক্তির ওপর প্রতিদিনের বদলে একজন করে মিসকীন খাওয়ানো ওয়াজিব।”[আল-শারহুল মুমতি (৬/৩২৪-৩২৫) সমাপ্ত]

তিন:

কোন মুসলিম কিয়ামুল লাইল (তারাবীর নামায) মসজিদে আদায় করুক কিংবা বাসায় আদায় করুক তার জন্য সওয়াব লেখা হবে। যদিও মসজিদে আদায় করা উত্তম।

আর যে ব্যক্তি প্রতিবছর মসজিদে গিয়ে তারাবীর নামায পড়তেন পরবর্তীতে রোগের কারণে তিনি যদি বাসায় পড়েন তাহলে আল্লাহ্‌ তাআলা তার জন্য পরিপূর্ণ সওয়াব লিখে দিবেন; যেন তিনি মসজিদেই তারাবী পড়েছেন।

আবু মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যদি কোন বান্দা অসুস্থ হয় কিংবা সফরে বের হয় তাহলে সে মুকীম বা সুস্থ থাকাবস্থায় যে আমলগুলো করত অনুরূপ আমল তার জন্য লেখা হয়।”[সহিহ বুখারী (২৯৯৬)]

চার:

রোগ বা ঘুম…ইত্যাদির মত কোন ওজরের কারণে যে ব্যক্তির রাতের কোন নামায ছুটে গেছে সে ব্যক্তির জন্য এ নামায দিনের বেলায় কাযা পালন করা শরিয়তসম্মত। আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, কোন ব্যথার কারণে বা অন্য কোন কারণে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রাতের কোন নামায যদি ছুটে যেত তাহলে দিনের বেলায় তিনি বার রাকাত নামায পড়তেন।”[সহিহ মুসলিম (৭৪৬)]

ইমাম নববী (রহঃ) বলেন:

“এ হাদিসে নৈমিত্তিক আমলগুলো নিয়মিত পালন মুস্তাহাব হওয়া এবং এগুলো ছুটে গেলে কাযা পালন করার পক্ষে দলিল রয়েছে।”[শারহু সহিহ মুসলিম (৬/২৭) থেকে সমাপ্ত]

তাই আপনি রাতের বেলায় যে পরিমাণ নামায পড়তেন সেটার কাযা করবেন এবং এক রাকাত বেশি পড়বেন; যাতে করে বিতির (বেজোড়) না হয়। যেহেতু রাতে ছাড়া বিতির নামায নেই।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *