কোন দক্ষ খেলোয়াডকে God কিংবা Godlike উপাধি দেয়া

প্রশ্ন ইদানিং খুব তীব্রভাবে পশ্চিমা দেশগুলোর ইলেক্ট্রনিক ভিডিও গেইম ছড়িয়ে পড়েছে। এ গেইমগুলো খেলোয়াড়দের মাঝে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। যখন কোন একজন খেলোয়াড অপর এক খেলোয়াডকে পরাজিত করে তখন স্ক্রীণে দেখা যায় “ওমুক ব্যক্তি ওমুক ব্যক্তিকে পরাজিত করেছে। কিন্তু সমস্যা হল—যখন কেউ বেশ কয়েকজন খেলায়াডকে পরাজিত করে তখন একটি অদ্ভূত বাণী দেখা যায় এবং বলা…

প্রশ্ন

ইদানিং খুব তীব্রভাবে পশ্চিমা দেশগুলোর ইলেক্ট্রনিক ভিডিও গেইম ছড়িয়ে পড়েছে। এ গেইমগুলো খেলোয়াড়দের মাঝে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। যখন কোন একজন খেলোয়াড অপর এক খেলোয়াডকে পরাজিত করে তখন স্ক্রীণে দেখা যায় “ওমুক ব্যক্তি ওমুক ব্যক্তিকে পরাজিত করেছে। কিন্তু সমস্যা হল—যখন কেউ বেশ কয়েকজন খেলায়াডকে পরাজিত করে তখন একটি অদ্ভূত বাণী দেখা যায় এবং বলা হয়: অমুক (Godlike)। আমি এ শব্দটির ব্যাখ্যা চাই। এ কথাটি কি বলা এবং খেলোয়াডদের মাঝে প্রসার করা কি জায়েয হবে? কারন আমি দেখতে পাই যে, কোন কোন খেলোয়াড অভিজ্ঞ অপর খেলোয়াডকে God বা Godlike উপাধিতে ভূষিত করে।

আলহামদু লিল্লাহ।.

কোন দক্ষ খেলোয়াডের ক্ষেত্রে কিংবা অন্য কারো ক্ষেত্রে God শব্দ ব্যবহার করা জায়েয নেই। কেননা এ শব্দটির অর্থ হচ্ছে- একজন ইলাহ্‌ বা আল্লাহ্‌। এবং কারো গুণ হিসেবে Godlike শব্দটি ব্যবহারের সময় ফুরিয়ে গেছে।

গেইমের মধ্যে যখন এ শব্দটি ফুটে উঠে তখন এর দ্বারা এ অর্থই উদ্দেশ্য। অর্থাৎ সে ইলাহের মত; সে পরাক্রমশালী, বিজয়ী।

এ কথা সুবিদিত যে, এক আল্লাহ্‌ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। তাঁর কোন অংশীদার নেই। তাঁর কোন সাদৃশ্য নেই। তিনি ছাড়া আর যা কিছু আছে সেগুলো তাঁর বান্দা, তাঁর প্রতিপালনাধীন, মাখলুক। এগুলোর মধ্যে ইলাহ হওয়ার কোন গুণ নেই। এবং কোন দিক থেকে ইলাহ্‌ এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়।

এ ধরণের কাজ আগের যুগের মুশরিকেরা অনেক আগে থেকেই করত। তারা যাকে ভালবাসে ও সম্মান করে তাকে ইলাহ বানিয়ে ফেলে।

আর—রাগেব আল-ইসফাহানি বলেন: তারা তাদের প্রত্যেক মাবুদের নাম দিয়েছে—ইলাহ। অনুরূপ কাজ তারা “আল্‌লাত” শব্দ দিয়েও করত। তারা সূর্যের নাম দিয়েছে—إلاهَة। যেহেতু তারা সূর্যের পূজা করত।

أَلَهَ فلان يَأْلُهُ الآلهة : অর্থ অমুক ব্যক্তি ইবাদত করেছে। কিংবা বলা হয়: ইলাহ হয়ে গেছে।

এই অর্থে ইলাহ শব্দ মাবুদ।[আল-মুফরাদাত, পৃষ্ঠা-৮৩]

অতএব, এসব শব্দ ব্যবহার করা থেকে হুশিয়ার, হুশিয়ার। কারণ কোন একটি কথা পূর্ব-পশ্চিমের মাঝে যেমন দূরত্ব বান্দাকে জাহান্নামের সর্ব নিম্নে এমন দূরত্বে নিয়ে যেতে পারে।

সহিহ বুখারী (৬৪৭৮) ও সহিহ মুসলিমে (২৯৮৮) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয় বান্দা আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টিমূলক এমন এক কথা বলে ফেলে; যে কথাকে বান্দা তেমন কিছু মনে করে না; কিন্তু আল্লাহ্‌ এই কথার মাধ্যমে তার মর্যাদা উন্নীত করেন। এবং নিশ্চয় বান্দা আল্লাহ্‌র ক্রোধ উদ্রেককারী এমন কোন কথা বলে ফেলে, বান্দা সে কথাকে তেমন কিছু মনে করে না; কিন্তু এই কথার কারণে আল্লাহ্‌ তাকে জাহান্নামের অতলে নিক্ষেপ করেন।”

সহিহ বুখারী (৬৪৭৭) ও সহিহ মুসলিমে (২৯৮৮) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে, তিনি বলেন: নিশ্চয় বান্দা এমন এক কথা বলে ফেলে, যে (তথ্যের) ব্যাপারে সে নিশ্চিত হয়নি; এ কথার কারণে সে ব্যক্তি পূর্ব দিগন্তের চেয়ে গভীর জাহান্নামের অতলে নিমজ্জিত হবে।

সুনানে তিরমিযি (২৩১৯) ও সুনানে ইবনে মাজাহ (৩৯৬৯) গ্রন্থে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবী বিলাল বিন হারেছ আল-মুযানি থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন: “তোমাদের কেউ আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টিমূলক এমন কথা বলে, সে কথা এত বেশি প্রসারতা পায় যা ঐ বান্দা নিজেও ধারণা করেনি। এর প্রতিফলে আল্লাহ্‌ সে ব্যক্তির আমলনামায় তার সাথে সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত তার সন্তুষ্টি লিখে দেন। নিশ্চয় তোমাদের কেউ আল্লাহ্‌র ক্রোধ উদ্রেককারী এমন কথা বলে; সে ব্যক্তি নিজেও ধারণা করে না যে এ কথা এমন পর্যায়ে পৌঁছবে। এর প্রতিফলে আল্লাহ্‌ সে ব্যক্তির আমলনামায় তার সাথে সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত তার অসন্তুষ্টি লিখে রাখেন।[আলবানী ‘সহিহুত তিরমিযি’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.