ক্ষুধা ও পিপাসার কারণে রোযা ভেঙ্গে ফেলার হুকুম

প্রশ্ন আমি মাগরিবের নামাযের আগে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আর ইফতার করিনি। ফজরের নামাযের সময় আমি জেগে উঠেছি। গত দিন থেকে আমি কিছুই খাইনি। তাই আমি রোযা ভেঙ্গে ফেলেছি। এটা কি জায়েয? আমি মাগরিবের নামাযের আগে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আর ইফতার করিনি। ফজরের নামাযের সময় আমি জেগে উঠেছি। গত দিন থেকে আমি কিছুই খাইনি। তাই আমি রোযা ভেঙ্গে…

প্রশ্ন

আমি মাগরিবের নামাযের আগে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আর ইফতার করিনি। ফজরের নামাযের সময় আমি জেগে উঠেছি। গত দিন থেকে আমি কিছুই খাইনি। তাই আমি রোযা ভেঙ্গে ফেলেছি। এটা কি জায়েয?

আমি মাগরিবের নামাযের আগে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আর ইফতার করিনি। ফজরের নামাযের সময় আমি জেগে উঠেছি। গত দিন থেকে আমি কিছুই খাইনি। তাই আমি রোযা ভেঙ্গে ফেলেছি। এটা কি জায়েয?

আলহামদু লিল্লাহ।.

সবার জানা যে, রোযা ইসলামের একটি রুকন (স্তম্ভ)।

কোন মুসলিমের জন্য নিছক পিপাসা ও ক্ষুধার কারণে কিংবা সে রোযা রাখতে পারবে না এ আশংকা থেকে এই ইবাদত পালনে অবহেলা করা জায়েয নয়। বরং সে ধৈর্য রাখবে, আল্লাহ্‌র সাহায্য চাইবে। ঠাণ্ডা নেয়ার জন্য মাথায় পানি ঢালতে ও গড়গড়া কুলি করতে কোন অসুবিধা নেই।

মুসলিমের উপর ওয়াজিব রোযা অবস্থায় তার দিন শুরু করা। যদি এমনটি ঘটে যে, তিনি রোযাটি পূর্ণ করতে পারছেন না; নিজের উপর মৃত্যু বা রোগাক্রান্ত হওয়ার আশংকা করছেন সেক্ষেত্রে তার জন্য রোযা ভাঙ্গা জায়েয। নিছক ধারণা থেকে রোযা ভাঙ্গবেন না। বরং তিনি কষ্টের শিকার হওয়ার পরে রোযা ভাঙ্গবেন।

ইবনুল কুদামা বলেন:

“সঠিক মতানুযায়ী: কেউ যদি তীব্র পিপাসা ও তীব্র ক্ষুধায় মৃত্যুর আশংকা করেন তাহলে সে ব্যক্তি রোযা ভেঙ্গে ফেলতে পারেন।”

শাইখ বিন উছাইমীন (রহঃ) আল-কাফী গ্রন্থের উপর টীকা সংযোগ করতে গিয়ে বলেন:

“যদি কেউ পিপাসার ভয় করে।” কিন্তু এখানে নিছক পিপাসাটা উদ্দেশ্য নয়। বরং যে পিপাসার কারণে মৃত্যুর আশংকা হয় কিংবা শারীরিক ক্ষতির আশংকা হয়।[তালীকাত ইবনু উছাইমীন আলাল ক্বাফী (৩/১২৪)]

ইমাম নববী (রহঃ) “আল-মাজমু” গ্রন্থে (৬/২৫৮) বলেন: “আমাদের মাযহাবের আলেমগণ ও অন্যান্য আলেমগণ বলেন: যে ব্যক্তি ক্ষুধা ও পিপাসার শিকার হয়ে মৃত্যুর আশংকা করছে তার উপর রোযা ভেঙ্গে ফেলা অনিবার্য; এমনকি সে যদি সুস্থ-সবল ও গৃহবাসী (মুকীম) মানুষ হয়ত তদুপরি। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাআলার বাণী হচ্ছে- “আর নিজেরা খুনোখুনি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তোমাদের প্রতি দয়াবান”।[সূরা নিসা, ৪:২৯] আল্লাহ্‌ তাআলা আরও বলেন: “নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না।”[সূরা বাক্বারা, ২:১৯৫] তবে, অসুস্থ ব্যক্তির মত এ ব্যক্তির উপরও কাযা পালন করা আবশ্যক হবে। আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।[সমাপ্ত]

অতএব, আপনার উপর ওয়াজিব হল: এই দিনের রোযাটি কাযা পালন করা। আর আপনি যদি রোযা ভাঙ্গার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করে থাকেন এবং কষ্ট হওয়ার আগে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন; যে কষ্ট রোযা ভাঙ্গাকে বৈধতা দেয়; সেক্ষেত্রে আপনার উপর আবশ্যক হল: কৃত কর্মের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে তওবা করা এবং এমন কর্ম দ্বিতীয়বার আর না করা।

আরও জানতে দেখুন: 65803 নং ও 37943 নং প্রশ্নোত্তর।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.