তরল পদার্থ খাদ্যনালীতে ফিরে আসা কি রোযা ভঙ্গের কারণ

প্রশ্ন আমি পাকস্থলীর অ্যাসিডে ভুগছি। যার কারণে অ্যাসিডযুক্ত তরল খাদ্যনালীর মুখে ফিরে আসে। এটা কি রোযা ভঙ্গের কারণ হিসেবে গণ্য হবে? আমি পাকস্থলীর অ্যাসিডে ভুগছি। যার কারণে অ্যাসিডযুক্ত তরল খাদ্যনালীর মুখে ফিরে আসে। এটা কি রোযা ভঙ্গের কারণ হিসেবে গণ্য হবে? আলহামদু লিল্লাহ।. পাকস্থলি থেকে তরল পদার্থ ফিরে আসাটা মানুষের অনিচ্ছায় ঘটে। অনেক সময় মানুষ…

প্রশ্ন

আমি পাকস্থলীর অ্যাসিডে ভুগছি। যার কারণে অ্যাসিডযুক্ত তরল খাদ্যনালীর মুখে ফিরে আসে। এটা কি রোযা ভঙ্গের কারণ হিসেবে গণ্য হবে?

আমি পাকস্থলীর অ্যাসিডে ভুগছি। যার কারণে অ্যাসিডযুক্ত তরল খাদ্যনালীর মুখে ফিরে আসে। এটা কি রোযা ভঙ্গের কারণ হিসেবে গণ্য হবে?

আলহামদু লিল্লাহ।.

পাকস্থলি থেকে তরল পদার্থ ফিরে আসাটা মানুষের অনিচ্ছায় ঘটে। অনেক সময় মানুষ অম্লতা বা তিক্ততা খাদ্যনালীতেও অনুভব করে। কিন্তু সেটা মুখ পর্যন্ত বেরিয়ে আসে না। এমতাবস্থায় এটি রোযা ভঙ্গকারী হিসেবে গণ্য হবে না। কেননা তা মুখ পর্যন্ত বেরিয়ে আসেনি।

যদি মুখ পর্যন্ত চলে আসে তাহলে সেটার হুকুম কিঞ্চিত বমি (القلس) বা বমির (القيء) হুকুম। القلس শব্দটির অর্থ কেউ বলেছেন: বমি। কেউ বলেছেন: সামান্য বমি; তথা যা পেট থেকে বেরিয়েছে কিন্তু এতে মুখ ভরে যায়নি। কেউ কেউ বলেন: তা হল পাকস্থলি ভরে যাওয়ার প্রেক্ষিতে পাকস্থলির মুখ থেকে যা বেরিয়ে আসে।[দেখুন: ইমাম নববীর ‘আল-মাজমু’ (৪/৪)]

এর হুকুম হচ্ছে যদি মুখ দিয়ে বাইরে ফেলে দেওয়া সম্ভব হওয়ার পরেও কেউ সেটাকে পেটে ফিরিয়ে নেয় তাহলে তার রোযা ভেঙ্গে যাবে। আর যদি বের করতে না পারার কারণে গিলে ফেলে তাহলে তার রোযার কোন ক্ষতি হবে না। দেখুন: 12659 নং প্রশ্নোত্তর।

‘আল-শারহুস সাগির’ গ্রন্থে (১/৭০০) (القلس) সম্পর্কে বলেন: “যদি সেটা ফেলে দেয়া না যায় (গলা অতিক্রম না করার কারণে) তাহলে তার উপর কোনকিছু বর্তাবে না।”

ইবনে হাযম তার ‘আল-মুহাল্লা’ গ্রন্থে (৪/৩৩৫) বলেন: “গলা থেকে যে (القلس) বের হয় সেটা রোযা ভঙ্গ করবে না; যদি না ব্যক্তি মুখে চলে আসার পরে এবং ফেলা দেয়া সম্ভবপর হওয়ার পরেও ইচ্ছাকৃতভাবে সেটাকে গিলে ফেলে।”

তিনি আরও বলেন (৪/৩৪৮):

“দাঁত থেকে নির্গত (القلس) ও রক্ত গলাতে চলে না গেলে যে, রোযা ভঙ্গ হবে না এ ব্যাপারে আমরা কোন মতভেদ জানি না। এমনকি যদি কোন মতভেদ পাওয়া যায় সেটার প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপ করা হবে না। কেননা (কুরআন-সুন্নাহর) কোন টেক্সট এর দ্বারা রোযা ভঙ্গ হওয়াকে আবশ্যক করে না।”[সংক্ষেপে সমাপ্ত]

মুয়াত্তার ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘আল-মুনতাকা’-তে (২/৬৫) বলেন: “মালেক থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন: রমযানের রোযাকালীন সময়ে যে ব্যক্তির সামান্য বমি মুখে চলে আসার পর সে এটাকে পুনরায় গিলে ফেলে তার উপর কাযা আবশ্যক হবে না। ইবনুল কাসেম বলেন: মালেক এ মত থেকে প্রর্ত্যাবর্তন করেছেন। তিনি বলেন: যদি সামান্য বমি এমন স্থান পর্যন্ত চলে আসে যে, ব্যক্তি চাইলে এটাকে ফেলে দিতে পারে; তদুপরি গিলে ফেলে তাহলে তার উপর কাযা পালন করা আবশ্যক হবে। শাইখ আবুল কাসেম বলেন: যদি জিহ্বাতে চলে আসার পরেও কেউ গিলে ফেলে তাহলে তার উপর কাযা পালন আবশ্যক হবে। আর যদি এই স্থানে পৌঁছার আগে গিলে ফেলে তাহলে তার উপর কোন কিছু আবশ্যক হবে না।”[সমাপ্ত]

‘আল-ইনসাফ’ গ্রন্থে বলেন:

বমি বা (القلس) মুখে চলে আসার পর যদি কেউ সেটাকে গিলে ফেলে তাহলে তার রোযা ভেঙ্গে যাবে; এমনকি সেটা অতি সামান্য হলেও। যেহেতু এর থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। এটি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন (অর্থাৎ ইমাম আহমাদ)।[সমাপ্ত]

‘হাশিয়াতুল আদাওয়ি’ গ্রন্থে (১/৪৪৮) বমির হুকুম উল্লেখ করার পর বলেন: “(القلس) বমির মত; যা পাকস্থলি ভরে যাওয়ার পর পাকস্থলির মুখ থেকে বেরিয়ে যায়।”[সমাপ্ত]

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *