যদি কেউ মোবাইল থেকে কিংবা মুখস্থ থেকে কুরআন পড়ে তার সওয়াব কি কম হবে?

প্রশ্ন যদি আমি মোবাইল থেকে কিংবা আমার মুখস্থ থেকে কুরআন পড়ি; মুসহাফ (গ্রন্থ) থেকে না পড়ি তাহলে কি আমার সওয়াব কম হবে? যদি আমি মোবাইল থেকে কিংবা আমার মুখস্থ থেকে কুরআন পড়ি; মুসহাফ (গ্রন্থ) থেকে না পড়ি তাহলে কি আমার সওয়াব কম হবে? আলহামদু লিল্লাহ।. আলহামদুলিল্লাহ। কুরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে- যেভাবে পড়লে ব্যক্তির একাগ্রতা…

প্রশ্ন

যদি আমি মোবাইল থেকে কিংবা আমার মুখস্থ থেকে কুরআন পড়ি; মুসহাফ (গ্রন্থ) থেকে না পড়ি তাহলে কি আমার সওয়াব কম হবে?

যদি আমি মোবাইল থেকে কিংবা আমার মুখস্থ থেকে কুরআন পড়ি; মুসহাফ (গ্রন্থ) থেকে না পড়ি তাহলে কি আমার সওয়াব কম হবে?

আলহামদু লিল্লাহ।.

আলহামদুলিল্লাহ।

কুরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে- যেভাবে পড়লে ব্যক্তির একাগ্রতা বাড়ে সেভাবে তেলাওয়াত করা। যদি মুখস্থ থেকে পড়লে একাগ্রতা বাড়ে তাহলে সেটাই উত্তম। আর যদি মুসহাফ থেকে পড়লে কিংবা মোবাইল থেকে পড়লে একাগ্রতা বাড়ে তাহলে সেটা করা উত্তম।

ইমাম নববী (রহঃ) ‘আল-আযকার’ গ্রন্থে (পৃষ্ঠা- ৯০-৯১) বলেন:

“মুসহাফ থেকে কুরআন পড়া মুখস্থ থেকে পড়ার চেয়ে উত্তম। আমাদের মাযহাবের আলেমগণ এমনটি বলেছেন। সলফে সালেহীনদের থেকেও এটাই প্রসিদ্ধ অভিমত। তবে, এটি সর্বক্ষেত্রে নয়। বরঞ্চ মুখস্থ থেকে তেলাওয়াতকারীর তাদাব্বুর, তাফাক্কুর, মন ও দৃষ্টির উপস্থিতি এভাবে একত্রিত হয় যা মুসহাফ থেকে তেলাওয়াতকারীর হয় না। অতএব, মুখস্থ থেকে তেলাওয়াত করাই উত্তম। আর যদি উভয় প্রকারের পড়া সম-মানের হয় তাহলে মুসহাফ থেকে পড়াই উত্তম। সলফে সালেহীনদের এটাই উদ্দেশ্য।[সমাপ্ত]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মুসহাফে দৃষ্টি দেয়ার ফযিলত সম্পর্কে কিছু দুর্বল হাদিস বর্ণিত হয়েছে যেগুলো দিয়ে দলিল দেয়ার উপযুক্ত নয়।

শাইখ বিন বায (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: মুসহাফ থেকে কুরআন পড়া কিংবা মুখস্থ থেকে কুরআন পড়ার মধ্যে সওয়াবের মধ্যে কি কোন পার্থক্য আছে? যখন মুসহাফ থেকে কুরআন পড়া হয় তখন কি দুই চোখ দিয়ে পড়াই যথেষ্ট; নাকি ঠোঁট নাড়তে হবে? নাকি শব্দও বের করতে হবে?

জবাবে তিনি বলেন: আমি এমন কোন দলিল জানি না যাতে মুসহাফ থেকে কুরআন পড়া বা মুখস্থ থেকে কুরআন পড়ার মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে। তবে, শরিয়তের বিধান হচ্ছে- তাদাব্বুর ও মনোযোগ দিয়ে পড়া। সেটা মুসহাফ থেকে হোক কিংবা মুখস্থ থেকে হোক। পাঠকারী যদি নিজে শুনে তখন এটাকে পড়া বলা হবে। শুধু চোখ দিয়ে দেখা যথেষ্ট নয়। অনুরূপভাবে উচ্চারণ না করে মনে মনে পড়াও যথেষ্ট নয়। সুন্নত হচ্ছে- তেলাওয়াতকারী উচ্চারণ করবে এবং তাদাব্বুর করবে। যেমনটি আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন: “এক মুবারক কিতাব, আপনার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহে তাদাব্বুর করে (গভীরভাবে চিন্তা করে) এবং যাতে বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা উপদেশ গ্রহণ করে।”[সূরা সোয়াদ, আয়াত: ২৯]

তিনি আরও বলেন: তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা রয়েছে?”[সূরা মুহাম্মদ ৪৭:২৪] সুতরাং মুখস্থ থেকে পড়া যদি অন্তরের একাগ্রতা ও গভীর চিন্তা-ভাবনা করার অধিক উপযুক্ত হয় তাহলে সেটাই উত্তম। আর যদি মুসহাফ থেকে পড়া অন্তরের একাগ্রতা ও গভীর চিন্তা-ভাবনার অধিক উপযুক্ত হয় তাহলে সেটাই উত্তম। আল্লাহ্‌ই তাওফিকদাতা।[মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ বিন বায (২৪/৩৫২)]

এ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, আপনি যদি একাগ্র চিত্তে ও গভীর চিন্তা-ভাবনাসহ মোবাইল থেকে কুরআন পড়েন তাহলে ইনশাআল্লাহ্‌ আপনার সওয়াবে কমতি হবে না। কারণ মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- অন্তরের উপস্থিতি ও কুরআনের মাধ্যমে উপকৃত হওয়া।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.