যারা মিলাদুন্নবী পালনকে মুস্তাহাব মনে করেন তাদের নিকট সেটি শরয়ি ইবাদত

প্রশ্ন প্রশ্ন: আমি জানি, ইসলামে ইবাদত হিসেবে যা কিছুর নব উদ্ভাবন করা হয় সেটা- বিদআত। এটা যদি সঠিক হয় তাহলে আমরা মিলাদকে বিদআত বলছি কেন? মিলাদ একটি সাধারণ অনুষ্ঠান; এর সাথে ইবাদতের কোন সম্পর্ক নেই। কেউ কেউ দলিল দেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য শুধু দুইটি ঈদ বা উৎসবের বিধান দিয়েছেন। এ…

প্রশ্ন

প্রশ্ন: আমি জানি, ইসলামে ইবাদত হিসেবে যা কিছুর নব উদ্ভাবন করা হয় সেটা- বিদআত। এটা যদি সঠিক হয় তাহলে আমরা মিলাদকে বিদআত বলছি কেন? মিলাদ একটি সাধারণ অনুষ্ঠান; এর সাথে ইবাদতের কোন সম্পর্ক নেই। কেউ কেউ দলিল দেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য শুধু দুইটি ঈদ বা উৎসবের বিধান দিয়েছেন। এ দুইটি ঈদ ছাড়া আর কোন উৎসব উদযাপন করা যাবে না। আমি এখানে পুনরায় বলতে চাই- মিলাদ একটি সাধারণ অনুষ্ঠান; এতে তো কোন ইবাদত সম্পর্কিত কোন রেওয়াজ রীতি নেই। এটি অন্য যে কোন জন্মদিবস পালনের মত।

প্রশ্ন: আমি জানি, ইসলামে ইবাদত হিসেবে যা কিছুর নব উদ্ভাবন করা হয় সেটা- বিদআত। এটা যদি সঠিক হয় তাহলে আমরা মিলাদকে বিদআত বলছি কেন? মিলাদ একটি সাধারণ অনুষ্ঠান; এর সাথে ইবাদতের কোন সম্পর্ক নেই। কেউ কেউ দলিল দেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য শুধু দুইটি ঈদ বা উৎসবের বিধান দিয়েছেন। এ দুইটি ঈদ ছাড়া আর কোন উৎসব উদযাপন করা যাবে না। আমি এখানে পুনরায় বলতে চাই- মিলাদ একটি সাধারণ অনুষ্ঠান; এতে তো কোন ইবাদত সম্পর্কিত কোন রেওয়াজ রীতি নেই। এটি অন্য যে কোন জন্মদিবস পালনের মত।

আলহামদু লিল্লাহ।.

আলহামদুলিল্লাহ। নবীর মিলাদ বা জন্মদিবস পালন নিছক কোন অনুষ্ঠান নয় যে, এর সাথে ইবাদতের কোন সম্পর্ক নেই। বরং যারা পালন করে তাদের কাছে এটি “ধর্মীয় ঈদ বা উৎসব” তারা আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে তা পালন করে। এর ব্যাখ্যা নিম্নে তুলে ধরা হলো। এক:

যারা এটি পালন করে তারা নবীর ভালবাসা থেকে পালন করে থাকে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসা সবচেয়ে উত্তম ইবাদত, এটি ইসলামের সবচেয়ে মজবুত ভিত্তি। সুতরাং এ চেতনা থেকে যা পালন করা হয় সেটা নিঃসন্দেহে ইবাদত হিসেবেই পালন করা হয়। তাই বলা যায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবীগণ তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন, বেশি সম্মান করতেন, তাঁর অধিকার সম্পর্কে পরবর্তীদের চেয়ে বেশি ওয়াকিবহাল ছিলেন। সুতরাং তাঁদের নিকট যা কিছু দ্বীনের অংশ ছিল না; সেটা তাঁদের পরেও দ্বীন হিসেবে সাব্যস্ত হবে না।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) এ ভিত্তি দিয়ে ঐ সমস্ত ব্যক্তিদের বিপক্ষে দলিল পেশ করেছেন যারা মসজিদে গোল হয়ে বসে সম্মিলিতভাবে পাথর টুকরা দিয়ে গুণে গুণে যিকির করা শুরু করেছিল: ঐ সত্তার কসম, যাঁর হাতে রয়েছে আমার প্রাণ; তোমরা কি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রজন্মের চেয়ে উত্তম কোন প্রজন্মের মধ্যে আছ? নাকি তোমরা পথভ্রষ্টতার দরজা উন্মোচন করছ!! তারা বলল: আবু আব্দুর রহমান, আমাদের উদ্দেশ্য নেকির কাজ করা। তিনি বললেন: কত লোক এমন আছে যে ভাল কাজ করতে চায় কিন্তু সঠিক দিশা পায় না।[সুনানে দারেমী ২১০]

দুই:

প্রতি বছর নির্দিষ্ট কোন মৌসুম উদযাপন করাটাই ঈদ বা উৎসব। এটি ধর্মীয় নিদর্শন। এ কারণে দেখা যায় ধর্মাবলম্বীরা তাদের উৎসব পালনকে পবিত্র জ্ঞান করে এবং সেটা উদযাপন করে।

শাইখ নাসের আল-আকল (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন:

ঈদ বা উৎসব ধর্মীয় নিদর্শন ও ইবাদত; যেমন- কিবলা, নামায, রোজা। এগুলো নিছক অভ্যাস নয়। এসব ক্ষেত্রে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ ও অনুকরণ অতি মারাত্মক ও ভয়াবহ। অনুরূপভাবে যে উৎসব পালন করার বিধান আল্লাহ দেননি সেটা জারী করা মানে আল্লাহর নাযিলকৃত ওহির বাইরে গিয়ে বিধান দেয়া, আল্লাহর নামে ইলম ছাড়া কথা বলা, তাঁর নামে মিথ্যাচার এবং ধর্মের মধ্যে নবআবিষ্কার। [ইকতিদাউস সিরাতিল মুস্তাকিম, পৃষ্ঠা-৫৮ থেকে সমাপ্ত]

তিন:

আবু দাউদ (১১৩৪) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনায় এলেন সে সময় মদিনাবাসীরা বিশেষ দুটি দিনে খেলাধুলা করত। (তা দেখে) তিনি বললেন: “এ দুটি দিনের বিশেষত্ব কি?” তারা বলল: আমরা জাহেলী যুগেও এ দুটি দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি বললেন: “আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে এ দুই দিনের পরিবর্তে আরও ভাল দুটি দিন দিয়েছেন- ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর।”[আলবানী সহিহ সুনানে আবু দাউদ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

যদি কোন উৎসব পালন অভ্যাসগত ব্যাপার হত, এর সাথে ইবাদতের কোন সম্পর্ক না থাকত, কাফেরদের সাথে সাদৃশ্যের কোন বিষয় না থাকত তাহলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে খেলাধুলা ও আনন্দ-ফুর্তি করতে দিতেন। যেহেতু বৈধ খেলাধুলা ও আনন্দ-ফুর্তি করতে কোন অসুবিধা নেই। সুতরাং খেলাচ্ছলে কোন উৎসব উদযাপন করা থেকে যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে বারণ করলেন, যে উদযাপনের মধ্যে নৈকট্য বা উপাসনার কিছু ছিল না অতএব, নৈকট্য ও ইবাদতের নিয়তে, বা এর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে অথবা এর উপর ভিত্তি করে যদি সেটা উদযাপন করা হয় তাহলে সেটার হুকুম কি হতে পারে? যেখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আমাদের বিষয়ের মধ্যে নতুন কিছু চালু করে যা এতে নেই সেটা প্রত্যাখ্যাত।”[সহিহ বুখারী (২৬৯৭) ও সহিহ মুসলিম (১৭১৮)]

আরও জানার জন্য 10843 ও 128530 নং প্রশ্নোত্তর দেখুন।

আল্লাহই ভাল জানেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *