যে ব্যক্তি ফজরের ওয়াক্ত হয়নি মনে করে স্ত্রী সহবাস করেছে

প্রশ্ন আমি যখন স্ত্রী-সহবাস করেছি তখন আমি জানতাম না যে, ফজরের আযান হয়ে গেছে। আমি এটি জানতাম না। আমার ধারণা ছিল আরও কয়েক মিনিট পর পাঁচটা বাজে আযান দিবে। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্কার হয়েছে যে, পাঁচটা বাজার ১৫মিনিট আগেই আযান দেয়। এক্ষেত্রে সমাধান কি? আমি ও আমার স্ত্রীর উপর কি কাফ্‌ফারা ওয়াজিব। উল্লেখ্য, সহবাস আমাদের উভয়ের…

প্রশ্ন

আমি যখন স্ত্রী-সহবাস করেছি তখন আমি জানতাম না যে, ফজরের আযান হয়ে গেছে। আমি এটি জানতাম না। আমার ধারণা ছিল আরও কয়েক মিনিট পর পাঁচটা বাজে আযান দিবে। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্কার হয়েছে যে, পাঁচটা বাজার ১৫মিনিট আগেই আযান দেয়। এক্ষেত্রে সমাধান কি? আমি ও আমার স্ত্রীর উপর কি কাফ্‌ফারা ওয়াজিব। উল্লেখ্য, সহবাস আমাদের উভয়ের সম্মতিক্রমে হয়েছে। আমরা সবেমাত্র ২৪ ঘন্টা পূর্বে সফর থেকে ফিরেছি। তখনও নামাযের সময়সূচী আমাদের জানা হয়নি। আমরা পৌঁছার দ্বিতীয় দিনে হঠাৎ করে রমযানের ঘোষণা পেয়েছি।

আমি যখন স্ত্রী-সহবাস করেছি তখন আমি জানতাম না যে, ফজরের আযান হয়ে গেছে। আমি এটি জানতাম না। আমার ধারণা ছিল আরও কয়েক মিনিট পর পাঁচটা বাজে আযান দিবে। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্কার হয়েছে যে, পাঁচটা বাজার ১৫মিনিট আগেই আযান দেয়। এক্ষেত্রে সমাধান কি? আমি ও আমার স্ত্রীর উপর কি কাফ্‌ফারা ওয়াজিব। উল্লেখ্য, সহবাস আমাদের উভয়ের সম্মতিক্রমে হয়েছে। আমরা সবেমাত্র ২৪ ঘন্টা পূর্বে সফর থেকে ফিরেছি। তখনও নামাযের সময়সূচী আমাদের জানা হয়নি। আমরা পৌঁছার দ্বিতীয় দিনে হঠাৎ করে রমযানের ঘোষণা পেয়েছি।

আলহামদু লিল্লাহ।.

যদি প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি আপনি যেভাবে উল্লেখ করেছেন সেভাবে হয়ে থাকে; তাহলে আপনাদের উপর কোন কিছু আবশ্যক নয়। কেননা যে ব্যক্তি ফজর হয়নি মনে করে কোন রোযা ভঙ্গকারী বিষয়ে লিপ্ত হয়েছে এবং পরবর্তীতে প্রমাণিত হয় যে, তখন ফজর হয়ে গিয়েছিল; সেক্ষেত্রে আলেমদের দুটো অভিমতের মধ্যে অগ্রগণ্য মতানুযায়ী রোযাটির কাযা নেই। চাই সেই রোযা ভঙ্গকারী বিষয়টি পানাহার হোক কিংবা সহবাস হোক।

শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহঃ) বলেন: আমি পছন্দ করছি যে, সহবাস, খাওয়া ও পান করা এবং রোযা ভঙ্গকারী অন্য যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো তিনটি শর্ত পূর্ণ হওয়া ছাড়া কোন ব্যক্তির রোযাকে ভঙ্গ করবে না:

১। রোযাদারের জানা থাকতে হবে যে, এটি রোযা ভঙ্গকারী; অন্যথায় রোযা ভঙ্গ হবে না। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “আর এ ব্যাপারে তোমরা কোনো অনিচ্ছাকৃত ভুল করলে তোমাদের কোনো অপরাধ নেই; কিন্তু তোমাদের অন্তর যা স্বেচ্ছায় করেছে (তা অপরাধ)। আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[সূরা আহযাব, আয়াত: ৫]

এবং আল্লাহ্‌ তাআলার বাণী: “হে আমাদের প্রভু! আমরা যদি বিস্মৃত হই কিংবা ভুল করি তাহলে আমাদেরকে শাস্তি দিবেন না।”[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ২৮৬] তখন আল্লাহ্‌ তাআলা বললেন: আমি সেটাই করলাম।

এবং যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আমার উম্মত থেকে ভুল ও বিস্মৃতি এবং যে ক্ষেত্রে তাদেরকে জবরদস্তি করা হয় সেটার গুনাহ উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।”

অজ্ঞব্যক্তি ভুলকারী। যেহেতু সে যদি জানত তাহলে সেটি করত না। সুতরাং অজ্ঞব্যক্তি যদি অজ্ঞতাবশতঃ কোন রোযা ভঙ্গকারী বিষয় করে ফেলে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। তার রোযা পরিপূর্ণ ও সঠিক; চাই তার সে অজ্ঞতা হুকুম সম্পর্কে হোক কিংবা সময় সম্পর্কে হোক।

সময় সম্পর্কে অজ্ঞতার উদাহরণ হলো: সে ধারণা করেছে যে, এখনও ফজরের ওয়াক্ত হয়নি; তাই সে খাবার গ্রহণ করেছে। তার রোযা সহিহ।

২। রোযাদারের জ্ঞাতসারে বিষয়টি ঘটা; যদি বিস্মৃতিবশতঃ হয় তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে না।

৩। রোযাদার স্বেচ্ছায় সেটি করা। যদি তার অনিচ্ছায় সেটি ঘটে তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে না।[মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ বিন উছাইমীন (১৯/২৮০) থেকে সমাপ্ত]

শাইখকে প্রশ্ন করা হয়েছিল: জনৈক ব্যক্তি নব-বিবাহিত। সেই ব্যক্তি শেষ রাতে এই ভেবে স্ত্রী সহবাস করেছে যে, এখনও রাত বাকী আছে। এরমধ্যে নামাযের ইকামত দেয়া হয়। এ ব্যাপারে আপনারা কি বলবেন? তার উপর কি বর্তাবে?

তিনি জবাব দেন: “তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না; পাপও না, কাফ্‌ফারাও না, কাযাও না। কেননা আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: এখন তোমরা তাদের সাথে সহবাস কর। তাদের সাথে অর্থাৎ স্ত্রীদের সাথে।

এবং তিনি বলেছেন: আর তোমাদের কাছে কালো রেখা থেকে প্রভাতের সাদা রেখা স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত (অর্থাৎ রাতের অন্ধকার চলে গিয়ে ভোরের আলো উদ্ভাসিত না হওয়া পর্যন্ত) তোমরা পানাহার কর।[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৭]

তাই খাওয়া, পান করা ও সহবাস করা এ তিনটি সমান। এ তিনটির মধ্যে পার্থক্য করার পক্ষে কোন দলিল নেই। এ প্রত্যেকটি রোযার নিষিদ্ধ বিষয়। এর কোনটি যদি অজ্ঞতা বা বিস্মৃতির অবস্থায় ঘটে থাকে তাহলে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না।”[সমাপ্ত]

এর মাধ্যমে পরিস্কার হয়ে গেল যে, আপনাদের উভয়ের উপর কোন কিছু বর্তাবে না; না রোযাটি কাযা করা, আর না কাফ্‌ফারা। এই হুকুম সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে যদি আপনারা সেই দিনের রোযা রেখে থাকেন। যদি আপনারা সেই দিনের রোযা না-রাখেন এই ভেবে যে, সহবাসের কারণে আপনাদের রোযা ভেঙ্গে গেছে; সেক্ষেত্রে আপনাদের উপর রোযাটির কাযা করা ছাড়া অন্য কিছু আবশ্যক হবে না।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.