রোজার সওয়াব কি কষ্টের পরিমাণের উপর নির্ভর করে?

প্রশ্ন আল্লাহর নিকট রোজার সওয়াব কি সমান? নাকি রোজাদারের কষ্টের সাথে রোজার সওয়াব সম্পৃক্ত? কেউ আছে শীতের দেশে রোজা পালন করে; তারা পিপাসার কষ্ট তেমন অনুভব করে না। পক্ষান্তরে কেউ আছে গরমের দেশে রোজা পালন করে। রোজার সাথে আরো যে সব ভাল আমল থাকতে পারে সেগুলো বাদ দিয়ে আমি শুধু রোজার সওয়াবটার ব্যাপারে জানতে চাচ্ছি?…

প্রশ্ন

আল্লাহর নিকট রোজার সওয়াব কি সমান? নাকি রোজাদারের কষ্টের সাথে রোজার সওয়াব সম্পৃক্ত? কেউ আছে শীতের দেশে রোজা পালন করে; তারা পিপাসার কষ্ট তেমন অনুভব করে না। পক্ষান্তরে কেউ আছে গরমের দেশে রোজা পালন করে। রোজার সাথে আরো যে সব ভাল আমল থাকতে পারে সেগুলো বাদ দিয়ে আমি শুধু রোজার সওয়াবটার ব্যাপারে জানতে চাচ্ছি?

আল্লাহর নিকট রোজার সওয়াব কি সমান? নাকি রোজাদারের কষ্টের সাথে রোজার সওয়াব সম্পৃক্ত? কেউ আছে শীতের দেশে রোজা পালন করে; তারা পিপাসার কষ্ট তেমন অনুভব করে না। পক্ষান্তরে কেউ আছে গরমের দেশে রোজা পালন করে। রোজার সাথে আরো যে সব ভাল আমল থাকতে পারে সেগুলো বাদ দিয়ে আমি শুধু রোজার সওয়াবটার ব্যাপারে জানতে চাচ্ছি?

আলহামদু লিল্লাহ।.

কষ্ট যে কোন ইবাদতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কষ্ট সহ্য করা ছাড়া কোন ইবাদত পালন করা সম্ভব নয়। কষ্টের তীব্রতা যত বেশি হবে পুরস্কার ও সওয়াব তত বেশি পাওয়া যাবে। তাইতো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বলেছেন :

إن لك من الأجر على قدر نصبك ونفقتك رواه الحاكم وصححه الألباني في صحيح الترغيب والترهيب (1116) وأصل الحديث في الصحيحين

“নিশ্চয় তোমার শ্রম ও ব্যয়ের পরিমাণ অনুযায়ী তুমি সওয়াব পাবে।”[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন আল-হাকেম, আলবানী ‘সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব’ (১১১৬) গ্রন্থে হাদিসটিকে সহীহ আখ্যায়িত করেছেন। এ হাদিসের ভিত্তি দুই সহীহ গ্রন্থে (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে) রয়েছে]

ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ ‘সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যা’ গ্রন্থে বলেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী:

عَلَى قَدْر نَصَبك أَوْ قَالَ : نَفَقَتك

তাঁর কথা: “তোমার শ্রম অনুযায়ী অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) বলেছেন: তোমার ব্যয় অনুযায়ী” এর থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, শ্রম ও ব্যয়ের বৃদ্ধির সাথে ইবাদতের সওয়াব ও মর্যাদা বেড়ে যায়। শ্রম দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- এমন শ্রম শরিয়তে যে শ্রম নিন্দনীয় নয়। অনুরূপভাবে ব্যয় দ্বারা উদ্দেশ্য হলো এমন ব্যয় শরিয়তে যে ব্যয় নিন্দনীয় নয়।” সমাপ্ত

“কষ্টের পরিমাণ অনুযায়ী সওয়াব পাওয়া যায়” এই নিয়মটি স্বতসিদ্ধ নয়। বরং এমন কিছু আমল রয়েছে যা তুলনামূলকভাবে সহজ, কিন্তু এতে সওয়াব বেশি।

যারকাশী ‘আল-মানছুর ফিল কাওয়ায়েদ’ (২/৪১৫-৪১৯)-গ্রন্থে বলেন:

“আমল যত বেশি ও কঠিন হবে তা অন্য আমলের চেয়ে তত বেশি উত্তম। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এর হাদীসে এসেছে:

وفي حديث عائشة رضي الله عنه : أجرك على قدر نصبك

তোমার সওয়াব তোমার শ্রমের পরিমাণ অনুযায়ী।

তবে অল্প আমল কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি আমলের চেয়ে উত্তম। যেমন:

মুসাফিরের জন্য নামায কসর (৪ রাকাতের স্থলে ২ রাকাত) করে পড়া পরিপূর্ণ পড়ার চেয়ে উত্তম।

জামায়াতের সাথে ১ বার নামায আদায় করা একাকী ২৫ বার নামায আদায় করা থেকে উত্তম।

ফজরের দুই রাকাত সুন্নত সংক্ষিপ্ত করে আদায় করা তা দীর্ঘ করে পড়ার চেয়ে উত্তম।

কুরবাণীকৃত পশুর কিছু গোশত খেয়ে বাকীটা সদকা করে দেয়া সম্পূর্ণ গোশত সদকা করে দেয়ার চেয়ে উত্তম।

নামাযে কোন একটি ছোট সূরার পুরাটুকু পড়া অন্য সূরার অংশ বিশেষ পড়ার চেয়ে উত্তম; এমনকি সে অংশ বিশেষ দীর্ঘ হলেও। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণত এটাই করতেন।”[উদ্ধৃতিটি পরিমার্জিত ও সংক্ষেপিত]

আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.