সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তি নিজের সন্দেহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না

প্রশ্ন আমি শাইখ মুহাম্মদ আ’লিশ এর ‘মিনাহুল জালিল’ এ একটি কথা পড়েছি: “সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অজর্ন শর্ত নয়— এটি অর্জনে তার অক্ষমতার কারণে। তার ক্ষেত্রে সন্দেহ হওয়ায় যথেষ্ট”। আপনারা কি এই কথার মর্ম পরিস্কার করতে পারবেন? আর এই কথা অনুযায়ী আমল করার বিধান কী?আমি শাইখ মুহাম্মদ আ’লিশ এর ‘মিনাহুল জালিল’ এ একটি কথা…

প্রশ্ন

আমি শাইখ মুহাম্মদ আ’লিশ এর ‘মিনাহুল জালিল’ এ একটি কথা পড়েছি: “সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অজর্ন শর্ত নয়— এটি অর্জনে তার অক্ষমতার কারণে। তার ক্ষেত্রে সন্দেহ হওয়ায় যথেষ্ট”। আপনারা কি এই কথার মর্ম পরিস্কার করতে পারবেন? আর এই কথা অনুযায়ী আমল করার বিধান কী?আমি শাইখ মুহাম্মদ আ’লিশ এর ‘মিনাহুল জালিল’ এ একটি কথা পড়েছি: “সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অজর্ন শর্ত নয়— এটি অর্জনে তার অক্ষমতার কারণে। তার ক্ষেত্রে সন্দেহ হওয়ায় যথেষ্ট”। আপনারা কি এই কথার মর্ম পরিস্কার করতে পারবেন? আর এই কথা অনুযায়ী আমল করার বিধান কী?আমি শাইখ মুহাম্মদ আ’লিশ এর ‘মিনাহুল জালিল’ এ একটি কথা পড়েছি: “সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অজর্ন শর্ত নয়— এটি অর্জনে তার অক্ষমতার কারণে। তার ক্ষেত্রে সন্দেহ হওয়ায় যথেষ্ট”। আপনারা কি এই কথার মর্ম পরিস্কার করতে পারবেন? আর এই কথা অনুযায়ী আমল করার বিধান কী?

আমি শাইখ মুহাম্মদ আ’লিশ এর ‘মিনাহুল জালিল’ এ একটি কথা পড়েছি: “সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অজর্ন শর্ত নয়— এটি অর্জনে তার অক্ষমতার কারণে। তার ক্ষেত্রে সন্দেহ হওয়ায় যথেষ্ট”। আপনারা কি এই কথার মর্ম পরিস্কার করতে পারবেন? আর এই কথা অনুযায়ী আমল করার বিধান কী?আমি শাইখ মুহাম্মদ আ’লিশ এর ‘মিনাহুল জালিল’ এ একটি কথা পড়েছি: “সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অজর্ন শর্ত নয়— এটি অর্জনে তার অক্ষমতার কারণে। তার ক্ষেত্রে সন্দেহ হওয়ায় যথেষ্ট”। আপনারা কি এই কথার মর্ম পরিস্কার করতে পারবেন? আর এই কথা অনুযায়ী আমল করার বিধান কী?আমি শাইখ মুহাম্মদ আ’লিশ এর ‘মিনাহুল জালিল’ এ একটি কথা পড়েছি: “সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অজর্ন শর্ত নয়— এটি অর্জনে তার অক্ষমতার কারণে। তার ক্ষেত্রে সন্দেহ হওয়ায় যথেষ্ট”। আপনারা কি এই কথার মর্ম পরিস্কার করতে পারবেন? আর এই কথা অনুযায়ী আমল করার বিধান কী?

আলহামদু লিল্লাহ।.

শাইখ মুহাম্মদ আ’লিশ (রহঃ) বলেন:

“এর ওয়াজিব (অর্থাৎ গোসলের ওয়াজিব) হচ্ছে— মর্দন”। অর্থাৎ ধৌতকরণ উদ্দিষ্ট অঙ্গটির উপর কোন অঙ্গ বা অন্য কিছু সঞ্চালন করা।

এক্ষেত্রে সঠিক মতানুযায়ী প্রবল ধারণা অর্জনই যথেষ্ট। কেননা ইজমা দ্বারা সাব্যস্ত পানি পৌঁছানোর আবশ্যকতা পালনে এটাই যথেষ্ট। আর সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অর্জন শর্ত নয়— এটি অর্জনে তার অক্ষমতার কারণে। বরং এ ব্যাপারে সন্দেহ অর্জিত হওয়ায় তার ক্ষেত্রে যথেষ্ট। তার উপর আবশ্যক হল সন্দেহকে পাত্তা না দেয়া। এটা ছাড়া এর আর কোন ঔষধ নাই।”[মিনাহুল জালিল (১/১২৭)]

ফিকাহবিদদের নিকট এই ধরণের মাসয়ালায় الاستنكاح শব্দটি ব্যবহৃত হলে এর অর্থ হয় আধিক্য ও প্রাবল্য। বলা হয় استنكحه الشك অর্থাৎ أي كثر عنده، وعاوده، وغلب عليه (তার সন্দেহ বেড়ে গেল, পুনঃপুনঃ সন্দেহ হল ও সন্দেহ তাকে কাবু করে ফেলল)। মালেকি মাযহাবের আলেমদের নিকট এই ভাবপ্রকাশটি মশহুর।

‘আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা আল-কুওয়াইতিয়্যা’ গ্রন্থে (৪/১২৮) এসেছে:

“তাজুল আরুস ও ‘আসাসুল বালাগা’ গ্রন্থে রয়েছে: মাজায বা রূপক অর্থে ব্যবহারের উদাহরণ হলো: استنكح النوم عينه (ঘুম তার চোখকে কাবু করে ফেলল)। কেবল মালিকী মাযহাবের আলেমগণ এই শব্দটিকে আভিধানিক অর্থের সাথে মিল রেখে কাবু করা অর্থে ব্যবহার করে থাকেন।

আর অন্য ফিকাহবিদ আলেমগণ এই ক্ষেত্রে غلبة الشك (সন্দেহের প্রাবল্য) বা كثرة الشك (সন্দেহের আধিক্য) বলে ভাব প্রকাশ করেন। অর্থাৎ তার সন্দেহ বেড়ে সেটা যেন তার অভ্যাসে পরিণত হল।”[সমাপ্ত]

সন্দেহের প্রাবল্য ও আধিক্যের মানদণ্ড হলো: সন্দেহ ব্যক্তিকে না ছাড়া; নিত্যদিন সন্দেহ তার সাথে লেগে থাকা।

আল-হাত্তাব ‘মাওয়াহিবুল জালিল’ গ্রন্থে (১/৪৬৬) বলেন: “المستنكح (সন্দেহপ্রবণ) হলো এমন ব্যক্তি যে প্রত্যেক ওজু কিংবা প্রত্যেক নামাযে সন্দেহ করে। কিংবা দিনে একবার বা দুইবার তার এমনটি ঘটে। আর যদি দুইদিন বা তিনদিন পর ঘটে তাহলে সেই ব্যক্তি مستنكح (সন্দেহপ্রবণ) নয়।”[সমাপ্ত]

সারকথা: ‘মিনাহুল জালিল’ গ্রন্থের উদ্ধৃতির মর্ম হলো: মর্দন সম্পন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে এই প্রবল ধারণা হওয়া যথেষ্ট যে, মর্দন উদ্দিষ্ট অঙ্গটির উপর হাত সঞ্চালন করা হয়েছে। ওযুর অঙ্গে পানি পৌঁছানোর জন্য এতটুকু যথেষ্ট। এই বিধান সন্দেহপ্রবণ নয় এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

আর সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে পবিত্রতা অর্জনের জন্য প্রবল ধারণা চাওয়া হবে না; বরং তার ক্ষেত্রে শুধু ধারণার মাধ্যমেই পবিত্রতা অর্জিত হবে; এমনকি যদি সেই ধারণা প্রবল না হয় তবুও।

সন্দেহের আধিক্য তার ক্ষেত্রে নিশ্চিত হওয়া বর্জন করার একটি ওজর। কারণ তাকে যদি নিশ্চিত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয় তাহলে সেটা তাকে কঠিন জটিলতায় ফেলে দিবে। শরিয়ত সহজতা নিয়ে ও জটিলতা দূর করতে এসেছে।

আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য সহজ চান এবং তোমাদের জন্য কষ্ট চান না।”[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৫]

তিনি আরও বলেন: “আল্লাহ্‌ তোমাদের উপর কোন জটিলতা আরোপ করতে চান না।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ০৬]

সন্দেহের আধিক্য থেকে মুক্তির উপায় হলো সন্দেহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করা। যদি শুচিবায়ুগ্রস্ত ব্যক্তি প্রত্যেক সন্দেহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করে তাহলে তার সন্দেহ আরও বেড়ে যাবে এবং শুচিবায়ু তার উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিবে।

‘আল-দিরদির’ তার ‘আল-শারহুস সগির’ গ্রন্থে (১/১৭০) বলেন: “যদি সন্দেহপ্রবণ নয় এমন ব্যক্তি কোন একটি স্থান ধৌত করে সে ব্যাপারে সন্দেহ করে: অর্থাৎ যদি সন্দেহপ্রবণ নয় এমন ব্যক্তি শরীরের কোন একটি স্থানে পানি পৌঁছেছে কিনা এ ব্যাপারে সন্দেহ করে তাহলে সেই স্থানে পানি ঢেলে ও মর্দন করে ধৌত করা ওয়াজিব।

পক্ষান্তরে সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তি (সে হলো ঐ ব্যক্তি যার ব্যাপক সন্দেহ হয়)-র উপর ওয়াজিব হলো সন্দেহকে পাত্তা না দেয়া। কারণ খুঁতখুঁতের পিছনে পড়ে থাকলে সেটা ব্যক্তির দ্বীনদারিকে মূল থেকে নষ্ট করে দেয়। আমরা এর থেকে আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় চাই।”

আস-সা’ওয়ি তাঁর ‘পার্শ্বটীকা’তে বলেন: “গ্রন্থকারের কথা: যদি সন্দেহ করে…। অর্থাৎ গোটা দেহে পানি পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে। আর অ-সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী প্রবল ধারণা হওয়াই যথেষ্ট।

গ্রন্থকারের কথা: তার উপর ওয়াজিব। অর্থাৎ নিশ্চিত হওয়া কিংবা প্রবল ধারণা হওয়া ব্যতীত তার দায়মুক্ত হবে না।”

আল-আদাওয়ি সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তি ও তার করণীয় সম্বন্ধে বলেন: “তার জন্য কোন ব্যাপারে সন্দেহ হওয়াই যথেষ্ট; ধারণা বা প্রবল ধারণার প্রয়োজন নাই এবং পুনরায় ধৌত করবে না।”[ফিকায়াতুত ত্বালিবির রাব্বানী (১/২১৬)]

আরও বলা হয় যে, সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তি তার মনে প্রথমে যা উদ্রেক হয় সেটার উপর নির্ভর করবে; আর পরে যেটার উদ্রেক হয় সেটার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবে না।

মুখতাসার ইবনুল হাজিব এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘আত-তাওযিহ’-এ (১/১৬৩) এসেছে: পক্ষান্তরে সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তির মনে প্রথমবার যা উদ্রেক হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে সেটাই ধর্তব্য। তিনি সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তি দ্বারা বুঝাতে চাচ্ছেন যার সন্দেহ অধিক। তিনি প্রথমে উদ্রেক হওয়া বিষয়টিকে ধর্তব্য ধরার যে মতটি উল্লেখ করেছেন সেটা কিছু ক্বারাওয়ীনদের অভিমত এবং উত্তরসূরী কিছু আলেম সে মতের অনুসরণ করেছেন। তারা বলেন: কেননা প্রথম উদ্রেক হওয়া বিষয়টির সময় সে সুষ্ঠু মস্তিষ্কসম্পন্ন; পরবর্তীতে সে হলো বিবেকহীনদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ইবনে আব্দুস সালাম বলেন: আল-মুদাওয়্যানা ও অন্য গ্রন্থের প্রত্যক্ষ বক্তব্য হলো: অব্যাহিত দেয়া। তার মনে কী উদ্রেক হলো সেটার দিকে বিলকুল না তাকানো। আমাদের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে এমন কিছু আলেম এই অভিমতকে প্রাধান্য দিতেন এবং এই কথা বলতেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই বিষয়ে তিনি পূর্বাঞ্চলের জনৈক আলেমের সাথে কথা বলেছেন। তিনি এই অভিমতটিকে এভাবে ব্যখ্যা করতেন যে, সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তি এবং যার বৈশিষ্ট্য এ ধরণের পরবর্তীতে তার প্রথম উদ্রেক হওয়া বিষয়টিও সুষ্ঠু হয় না। বাস্তবতা সেটার পক্ষেই সাক্ষ্য দেয়।”[সমাপ্ত]

দেখুন: ‘আত-তাজ ওয়াল ইকলিল’ (১/৩০১), ‘আত-তাজ ওয়াল ইকলিল’ (২/১৯)

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.