স্বামী তালাক দেয়ার কসম করেছে যেন তার স্ত্রী নিজস্ব সম্পদ থেকে নিজের পরিবারকে কিছু না দেয়

প্রশ্ন আমার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল আমি তাদেরকে আমার নিজস্ব সম্পদ থেকে যৎসামান্য কিছু দেয়া কি জায়েয? উল্লেখ্য, আমার পরিবার ও স্বামীর মাঝে মতবিরোধ বিদ্যমান। আমার স্বামী আমাকে তালাক্ব দেয়ার কসম করেছে যাতে করে তাদেরকে কিছু না দেই। একবার আমি এ ব্যাপারে তার থেকে অনুমতি নেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানিয়েছে; যেহেতু…

প্রশ্ন

আমার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল আমি তাদেরকে আমার নিজস্ব সম্পদ থেকে যৎসামান্য কিছু দেয়া কি জায়েয? উল্লেখ্য, আমার পরিবার ও স্বামীর মাঝে মতবিরোধ বিদ্যমান। আমার স্বামী আমাকে তালাক্ব দেয়ার কসম করেছে যাতে করে তাদেরকে কিছু না দেই। একবার আমি এ ব্যাপারে তার থেকে অনুমতি নেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানিয়েছে; যেহেতু সে আমাকে তালাক্ব দেয়ার কসম করেছে। সে আমাকে বলে: পরিবার ছারখার করতে চাও?

আমার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল আমি তাদেরকে আমার নিজস্ব সম্পদ থেকে যৎসামান্য কিছু দেয়া কি জায়েয? উল্লেখ্য, আমার পরিবার ও স্বামীর মাঝে মতবিরোধ বিদ্যমান। আমার স্বামী আমাকে তালাক্ব দেয়ার কসম করেছে যাতে করে তাদেরকে কিছু না দেই। একবার আমি এ ব্যাপারে তার থেকে অনুমতি নেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানিয়েছে; যেহেতু সে আমাকে তালাক্ব দেয়ার কসম করেছে। সে আমাকে বলে: পরিবার ছারখার করতে চাও?

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক: নারী তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া নিজের সম্পদ দান করার অধিকার রাখেন

কোন নারী তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া নিজের সম্পদ দান করার অধিকার রাখেন। তবে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিবেচনা থেকে তাকে জানানো বাঞ্চনীয়; বিশেষতঃ অনেক বেশি সম্পদ হলে।

সহিহ বুখারী (৯৭৮) ও সহিহ মুসলিমে (৮৮৫) জাবির বিন আব্দুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন দাঁড়ালেন। নামায আদায় করলেন। নামায দিয়ে শুরু করলেন। তারপর খোতবা দিলেন। খোতবা শেষ করে নারীদের কাছে এলেন। বেলালের হাতে ঠেক দিয়ে তিনি নারীদেরকে উপদেশ দিলেন। বেলাল তার কাপড় বিছিয়ে দিলেন যার মধ্যে নারীরা তাদের দানগুলো ফেলছিল। অপর এক বর্ণনায় এসেছে: তারা তাদের অলঙ্কারগুলো দান করে দিচ্ছিল।

নববী বলেন: “নারীর জন্য স্বামীর অনুমিত ছাড়া দান করা জায়েয হওয়ার পক্ষে এই হাদিসে দলিল রয়েছে। আর তা স্ত্রীর সম্পদের এক তৃতীয়াংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটা আমাদের মাযহাব এবং অধিকাংশ আলেমের মাযহাব।

ইমাম মালেক বলেন: এক তৃতীয়াংশের বেশি সম্পদ স্বামীর সন্তুষ্টি ছাড়া দান করা জায়েয নয়।

হাদিস থেকে আমাদের দলিল হল: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদেরকে জিজ্ঞেস করেননি যে, তারা কি স্বামীদের অনুমতি নিয়েছে; নাকি নেয়নি? এ দানটা কি এক তৃতীয়াংশ সম্পদের বাইরে থেকে; নাকি নয়? যদি এ ক্ষেত্রে হুকুম ভিন্ন ভিন্ন হত; তাহলে তিনি তাদেরকে অবশ্যই জিজ্ঞেস করতেন।”[শারহু মুসলিম (৬/১৭৩) থেকে সমাপ্ত]

হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ) বলেন: “স্বামীর অনুমতি ছাড়া নারীর দান করা জায়েয হওয়ার পক্ষে এই হাদিসে দলিল রয়েছে।”[ফাতহুল বারী (১/১৯৩) থেকে সমাপ্ত]

যদি কোন স্ত্রী নির্বোধ হয়; সম্পদ খরচ করতে না জানেন সেক্ষেত্রে স্বামী তাকে তার সম্পদ দান করা থেকে বাধা দিতে পারেন। আলেমগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিম্নোক্ত হাদিসটিকে এ অর্থে ব্যাখ্যা করেছেন: “স্বামীর অনুমতি ছাড়া কোন নারীর জন্য কোন কিছু দেয়া জায়েয নয়।”[মুসনাদে আহমাদ (৬৬৪৩), সুনানে আবু দাউদ (৩৫৪৭), আলবানী ‘সহিহু আবু দাউদ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

আরও জানতে দেখুন: 48952 নং ও 4037 নং প্রশ্নোত্তর।

দুই: স্বামী কসম করেছে যেন স্ত্রী নিজের পরিবারকে নিজ সম্পদ থেকে কিছু না দেয়

যদি আপনার স্বামী তালাকের কসম করে যেন আপনি আপনার পরিবারকে দান না করেন এবং বলে যে, “পরিবার ছারখার করতে চাও”: তাহলে আমরা আপনাকে এটি লঙ্ঘন না করার উপদেশ দিব। কেননা আপনি যদি আপনার পরিবারকে দান করেন এর পরিপ্রেক্ষিতে জমহুর আলেমের মতে, স্বামী তালাক্বের নিয়ত করুক বা না করুক সাধারণভাবে তালাক হয়ে যাবে।

আলেমদের অন্য একটি অভিমত হচ্ছে: স্বামী যদি তালাক্ব দেয়ার নিয়ত না করে তাহলে তালাক্ব হবে না। যদি সে তালাক্বের নিয়ত না করে থাকে তাহলে কসমের কাফ্‌ফারা পরিশোধ করা তার উপর আবশ্যক হবে।

আপনি ও আপনার স্বামীর এই অভিমতটি গ্রহণ করার অধিকার রয়েছে। যদি আপনি দেখেন যে, আপনার পরিবারের তীব্র প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে আপনার স্বামীর সাথে কথা বলে দেখুন যাতে করে তিনি তার নিয়তটা ভেবে দেখেন। যদি তার নিয়তে থাকে আপনাকে বিরত রাখা এবং তালাক্বের উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে তিনি আপনাকে অনুমতি দিতে পারেন এবং নিজের কসমের কাফ্‌ফারা পরিশোধ করতে পারেন।

তালাক্ব দিয়ে কসম করার বিধান জানতে 39941 নং প্রশ্নোত্তরটি দেখুন।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.