আমি কিভাবে একজন ভন্ড শিক্ষক অথবা একজন ভন্ড নবী চিনতে পারব?

প্রশ্ন আমি কিভাবে একজন ভন্ড শিক্ষক অথবা একজন ভন্ড নবী চিনতে পারব? উত্তর যীশু স্বয়ং আমাদের এই বলে সতর্ক করেছেন যে, “অনেক ভন্ড মশীহ ও ভন্ড নবী” আসবে এবং সম্ভব হলে ঈশ্বরের বাছাই করা লোকদেরও তারা ঠকাবে (মথি ২৪:২৩-২৭; এছাড়া ২পিতর ৩:৩ পদ এবং যিহূদা ১৭-১৮ পদগুলোও লক্ষা করুন)। ছলনাপূর্ণ বা অসত্য বিষয় এবং ভন্ড…

প্রশ্ন

আমি কিভাবে একজন ভন্ড শিক্ষক অথবা একজন ভন্ড নবী চিনতে পারব?

উত্তর

যীশু স্বয়ং আমাদের এই বলে সতর্ক করেছেন যে, “অনেক ভন্ড মশীহ ও ভন্ড নবী” আসবে এবং সম্ভব হলে ঈশ্বরের বাছাই করা লোকদেরও তারা ঠকাবে (মথি ২৪:২৩-২৭; এছাড়া ২পিতর ৩:৩ পদ এবং যিহূদা ১৭-১৮ পদগুলোও লক্ষা করুন)। ছলনাপূর্ণ বা অসত্য বিষয় এবং ভন্ড শিক্ষকদের থেকে নিজেদের রক্ষা করার সর্বোত্তম উপায় হলো সত্য জানা। কোন কিছুকে দোষারোপ করার আগে সে সম্বন্ধে আগে ভালভাবে অধ্যয়ন করা প্রয়োজন। যে সব বিশ্বাসী “নির্ভুলভাবে সত্যের বাক্য শিক্ষা দেয়” (২তীমথিয় ২:১৫ পদ) এবং যে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বাইবেল অধ্যয়ন করে সে-ই কেবল মিথ্যা বা ভুল মতবাদগুলো সনাক্ত করতে পারে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে, একজন বিশ্বাসী যে মথি ৩:১৬-১৭ পদে উল্লেখিত পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মার কাজের বিষয়ে পড়েছে সে তৎক্ষণাৎ ঐ মতবাদগুলোকে প্রশ্ন করবে যেগুলো ত্রিত্ববাদ (পিতা-পুত্র-পবিত্র আত্মা)-কে অস্বীকার করে। অতএব, পবিত্র বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য এখনই মনস্থির করুন এবং শাস্ত্র যে সব শিক্ষার কথা বলে সেগুলো যাচাই করে দেখতে সচেষ্ট হোন।

মথির লেখা সুসমাচারে বলা হয়েছে, “ফল দিয়েই গাছ চেনা যায়” (মথি ১২:৩৩খ পদ)। যখন কোন “ফলাফল”-এর খোঁজ করা হয় তখন যে কোন শিক্ষকের দেওয়া শিক্ষার সঠিকতা যাচাই করার জন্য তিনটি বিশেষ পরীক্ষা প্রয়োগ করা যেতে পারে:

১) এই শিক্ষক/শিক্ষিকা যীশু সম্বন্ধে কী বলেন? মথি ১৬:১৫-১৬ পদে যীশু তাদের বললেন, “কিন্তু তোমরা কী বল, আমি কে?” শিমোন-পিতর বললেন, “আপনি সেই মশীহ, জীবন্তু ঈশ্বরের পুত্র।” এরূপ উত্তর দেওয়ার জন্য শিমোন-পিতরকে “ধন্য” বলা হয়েছিল। ২যোহন ৯ পদে আমরা পাঠ করি যে, “যারা খ্রীষ্টের দেওয়া শিক্ষার সীমা ছাড়িয়ে যায় এবং সেই শিক্ষায় স্থির থাকে না তাদের অন্তরে ঈশ্বর নেই। কিন্তু যে সেই শিক্ষায় স্থির থাকে তার অন্তরে পিতা ও পুত্র দু’জনেই আছেন।” অন্য কথায় বলা যায়, যীশু খ্রীষ্ট এবং তাঁর পরিত্রাণ সাধনকারী কাজ হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; তার কাছ থেকে সতর্ক থাকুন যে অস্বীকার করে যে, যীশু ঈশ্বরের সমান যিনি যীশুকে ত্যাগস্বীকারমূলক মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়েছিলেন, অথবা যিনি মানুষ হিসাবে যীশুকে পাপের কারণে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ১যোহন ২:২২ পদে লেখা আছে, “যে বলে, যীশু মশীহ নন, সে মিথ্যাবাদী ছাড়া আর কী? পিতা ও পুত্রকে যে অস্বীকার করে সে-ই তো খ্রীষ্টের শত্রু।”

২) এই শিক্ষক/শিক্ষিকা কী খ্রীষ্টের সুখবর প্রচার করেন? সুসমাচার বা সুখবরকে ভাল খবর বা সংবাদ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, শাস্ত্র অনুসারে যার মধ্যে রয়েছে যীশুর মৃত্যু, তাঁর সমাধি বা কবর এবং তাঁর পুনরুত্থান (১করিন্থীয় ১৫:১-৪ পদ)। তাদের বলা শব্দ বা কথাগুলো কতই না সুন্দর: “ঈশ্বর আপনাকে ভালবাসেন,” “ঈশ্বর চান যেন আমরা ক্ষুধার্তদের খাবার দেই,” এবং “ঈশ্বর চান যেন আপনি সম্পদশালী হন”- এগুলোর কোনটিই সুসমাচারের বাণী নয়। গালাতীয় ১:৭ পদে পৌল এভাবে আমাদের সতর্ক করেছেন, “তবুও কিছু লোক আছে যারা তোমাদের স্থির থাকতে দিচ্ছে না, আর খ্রীষ্টের বিষয়ে সুখবর বদলাতে চাইছে।” কারো-ই নয়, এমনকি কোন বিখ্যাত প্রচারকেরও ঈশ্বর আমাদের যে সুখবর দিয়েছেন তা পরিবর্তন করার বিন্দুমাত্র অধিকার নেই। “যে সুখবর তোমরা গ্রহণ করেছ তা থেকে আলাদা কোন সুখবর যদি কেউ প্রচার করে তবে তার উপর অভিশাপ পড়ুক” (গালাতীয় ১:৯ পদ)।

৩) এই শিক্ষক/শিক্ষিকা কী এমন কোন চারিত্রিক গ্রণাবলী প্রকাশ করে যা ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করে? ভন্ড শিক্ষকদের কথা বলতে গিয়ে যিহূদা ১১ পদে এই কথা বলা হয়েছে যে, “তারা কয়িনের পথে গেছে, লাভের জন্য বিলিয়মের ভুলের হাতে নিজেদের ছেড়ে দিয়েছে আর কোরহের মত বিদ্রোহ করে ধ্বংস হয়ে গেছে।” অন্য কথায় বলা যায় যে, একজন ভন্ড শিক্ষককে তার গর্বভাব (ঈশ্বরের পরিকল্পনা কয়িন কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হওয়া), তার লোভ (টাকার জন্য বিলিয়মের ভাববাণী) এবং তার বিদ্রোহ (মোশির উপরে কোরহের নিজেকে উন্নীতকরণের মনোভাব)- এগুলোর মধ্য দিয়েই তাকে চেনা যায়। যীশু এই রকম লোকদের থেকে আমাদের সাবধান থাকতে বলেছেন এবং তাদের ফল দেখেই আমরা তাদের চিনতে পারব (মথি ৭:১৫-২০ পদ)।

আরও অধ্যয়নের জন্য বাইবেলের ঐ বইগুলো পুনরায় লক্ষ্য করুন যেখানে বিশেষভাবে মন্ডলীগুলোর মধ্যে বিদ্যমান ভ্রান্ত বা ভুল শিক্ষার বিষয়ে লেখা রয়েছে: গালাতীয়, ২পিতর, ১যোহন ২যোহন এবং যিহূদা- এই বইগুলো আরও বেশী করে পড়ুন। প্রায়ই কোন ভন্ড শিক্ষক বা নবীকে চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ শয়তান নিজেকে আলোতে পূর্ণ স্বর্গদূত হিসাবে দেখাতে নিজের রূপ বদলে ফেলে (২করিন্থীয় ১১:১৪ পদ), শয়তানের সেবাকারীরা ন্যায়ের সেবা করছে এমন ভাব প্রকাশ করে (২করিন্থীয় ১১:১৫ পদ)। কেবলমাত্র সত্যের সাথে সুপরিচিত হওয়ার মধ্য দিয়েই আমরা কোন নকল বা জাল করা বিষয় সনাক্ত করতে সক্ষম হয়ে উঠতে পারি।

[English]



[বাংলা হোম পেজে ফিরে যান]

আমি কিভাবে একজন ভন্ড শিক্ষক অথবা একজন ভন্ড নবী চিনতে পারব?

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.