নিজ পিতার জন্য কোন নারীর অধিক দুঃখ করা কি ধৈর্যের পরিপন্থী

প্রশ্ন আমার বাবা ৩ মাস আগে মারা গেছেন। আমি তাকে খুব মিস করি। অনেক ওলটপালট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কখনও কখনও আমি প্রচণ্ড ভারাক্রান্ত হই। যেন তিনি গতকাল মারা গেছেন। কখনও কখনও জীবনের প্রতি কোন আগ্রহ অনুভব করি না। কখনও কখনও শান্ত থাকি; কোন কিছুই অনুভব করি না…। আমি যতটুকু ইসলামী জ্ঞান অর্জন করেছি তা…

প্রশ্ন

আমার বাবা ৩ মাস আগে মারা গেছেন। আমি তাকে খুব মিস করি। অনেক ওলটপালট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কখনও কখনও আমি প্রচণ্ড ভারাক্রান্ত হই। যেন তিনি গতকাল মারা গেছেন। কখনও কখনও জীবনের প্রতি কোন আগ্রহ অনুভব করি না। কখনও কখনও শান্ত থাকি; কোন কিছুই অনুভব করি না…। আমি যতটুকু ইসলামী জ্ঞান অর্জন করেছি তা চলনসই। আমি অনেক দ্বীনি বইপুস্তক পড়েছি। বিভিন্ন দ্বীনি দারস ও আলোচনাতে হাযির হই। আমি সবরের অর্থ ও সওয়াব জানি। আমার বাবার জন্য অনেক দোয়া করি। আমি অনেক সময় মনে মনে বলি, ঘুমের আগে বলি: ইয়া রব্ব! আমি আপনার নির্ধারণের প্রতি সন্তুষ্ট। আপনিই দাতা। আপনিই বঞ্চিতকারী। আপনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমি যা জানি, আর যা জানি না উভয় ক্ষেত্রে আমাকে ক্ষমা করে দিন। তদুপরি আমি নিজের বিষয়টি নিয়ে পেরেশানিতে আছি। আমার মনে উদ্রেক হয় যে আমি মুনাফিক। আমি যদি ধৈর্যশীলা হতাম তাহলে এই যন্ত্রণা ও তীব্র কাঠিন্য কিভাবে অনুভব করি। আমি যা অনুভব করছি সেটা কি ধৈর্যের স্বরূপের পরিপন্থী। যদি আমি তাকদীরের প্রতি সন্তুষ্ট না হই তাহলে কিভাবে আমি সন্তুষ্টিতে পৌঁছতে পারি..? আমি আল্লাহ্‌র السلام (আস্‌-সালাম; শান্তিদাতা) নামের অর্থ পড়েছি। যে আয়াতগুলোতে এ নামটি এসেছে সে আয়াতগুলো তাদাব্বুর (চিন্তাভাবনা) করেছি। আমি আমার বাবার জন্য দোয়া করতে গিয়ে বলি: ‘হে আল্লাহ্‌! আপনি আস্‌-সালাম (শান্তিদাতা)। শান্তি আপনার পক্ষ থেকেই। আপনি বরকতময়। আপনি সমুন্নত। হে মহান মর্যাদা ও পরিপূর্ণ অনুকম্পার অধিকারী! আপনি আমার পিতাকে তার কবরে শান্তিতে রাখুন। যেদিন তিনি জীবিত হয়ে পুনরুত্থিত হবেন সেদিনও তাকে শান্তিতে রাখুন’। আমার এ দোয়াটি কি সঠিক?

আমার বাবা ৩ মাস আগে মারা গেছেন। আমি তাকে খুব মিস করি। অনেক ওলটপালট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কখনও কখনও আমি প্রচণ্ড ভারাক্রান্ত হই। যেন তিনি গতকাল মারা গেছেন। কখনও কখনও জীবনের প্রতি কোন আগ্রহ অনুভব করি না। কখনও কখনও শান্ত থাকি; কোন কিছুই অনুভব করি না…। আমি যতটুকু ইসলামী জ্ঞান অর্জন করেছি তা চলনসই। আমি অনেক দ্বীনি বইপুস্তক পড়েছি। বিভিন্ন দ্বীনি দারস ও আলোচনাতে হাযির হই। আমি সবরের অর্থ ও সওয়াব জানি। আমার বাবার জন্য অনেক দোয়া করি। আমি অনেক সময় মনে মনে বলি, ঘুমের আগে বলি: ইয়া রব্ব! আমি আপনার নির্ধারণের প্রতি সন্তুষ্ট। আপনিই দাতা। আপনিই বঞ্চিতকারী। আপনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমি যা জানি, আর যা জানি না উভয় ক্ষেত্রে আমাকে ক্ষমা করে দিন। তদুপরি আমি নিজের বিষয়টি নিয়ে পেরেশানিতে আছি। আমার মনে উদ্রেক হয় যে আমি মুনাফিক। আমি যদি ধৈর্যশীলা হতাম তাহলে এই যন্ত্রণা ও তীব্র কাঠিন্য কিভাবে অনুভব করি। আমি যা অনুভব করছি সেটা কি ধৈর্যের স্বরূপের পরিপন্থী। যদি আমি তাকদীরের প্রতি সন্তুষ্ট না হই তাহলে কিভাবে আমি সন্তুষ্টিতে পৌঁছতে পারি..? আমি আল্লাহ্‌র السلام (আস্‌-সালাম; শান্তিদাতা) নামের অর্থ পড়েছি। যে আয়াতগুলোতে এ নামটি এসেছে সে আয়াতগুলো তাদাব্বুর (চিন্তাভাবনা) করেছি। আমি আমার বাবার জন্য দোয়া করতে গিয়ে বলি: ‘হে আল্লাহ্‌! আপনি আস্‌-সালাম (শান্তিদাতা)। শান্তি আপনার পক্ষ থেকেই। আপনি বরকতময়। আপনি সমুন্নত। হে মহান মর্যাদা ও পরিপূর্ণ অনুকম্পার অধিকারী! আপনি আমার পিতাকে তার কবরে শান্তিতে রাখুন। যেদিন তিনি জীবিত হয়ে পুনরুত্থিত হবেন সেদিনও তাকে শান্তিতে রাখুন’। আমার এ দোয়াটি কি সঠিক?

আলহামদু লিল্লাহ।.

এই দুনিয়ার জীবনে এমন কেউ নেই যে তার নিজের ব্যাপারে, তার পরিবারের ব্যাপারে, তার প্রিয়জনের ব্যাপারে কিংবা তার সম্পদের ব্যাপারে মুসিবত থেকে নিরাপদ।

মুমিনের উপর ওয়াজিব হচ্ছে এমন কোন মুসিবতে আক্রান্ত হলে ধৈর্য ধারণ করা। আর যদি সন্তুষ্টির স্তরে উন্নীত হতে পারে তাহলে সেটি আরও অধিকতর পরিপূর্ণ, উত্তম ও অধিক সওয়াবের। ইতিপূর্বে ধৈর্য ও সন্তুষ্টি এ দুটোর মধ্যে পার্থক্য 219462 নং প্রশ্নোত্তরে তুলে ধরা হয়েছে।

আপনি কোন কোন সময় যা অনুভব করেন এটি ধৈর্যের পরিপন্থী নয়। যেহেতু এটি কেবলমাত্র অভ্যন্তরীণ অনুভূতি; এটি শরিয়ত পরিপন্থী কথা বা কাজ হিসেবে প্রকাশ পায়নি; উদাহরণ বিলাপ করা, কাপড়চোপড় ছিড়ে ফেলা ইত্যাদি।

মানুষ যখন তার একান্ত আপনজনকে হারায় তখন প্রচণ্ড দুঃখের এ অনুভূতি মানুষের এখতিয়ারের বাইরে এসে যায়; যেমনটি আপনার অবস্থা।

তবে একজন মুসলিমের করণীয় হচ্ছে এই দুঃখকে বাড়তে না দেয়া, এই দুঃখের সাথে অগ্রসর না হওয়া; যাতে করে এই দুঃখ তার জীবনের উপর ও ইবাদত-বন্দেগীর উপর প্রভাব ফেলতে না পারে। আপনি বেশি সময় একাকী থাকবেন না। এসব দুঃখ নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করবেন না। উপকারী কোন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। আপনি দুঃখ যাতনার মধ্যে বন্দি হয়ে পড়বেন না; যে দুঃখগুলোকে শয়তান চাঙ্গা করে তোলে। যাতে করে মুসলিম ব্যক্তি ভারাক্রান্ত ও বেদনাগ্রস্ত হয়ে বসে থাকে। কারণ কোন মুসলিমের মনে দুঃখ ঢুকাতে পারলে শয়তান খুশি হয়। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “(কাফেরদের) এই গোপন পরামর্শ তো শয়তানের পক্ষ থেকে; মুমিনদেরকে দুঃখ দেওয়ার জন্য; তবে আল্লাহ্‌র অনুমতি ছাড়া সে তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। অতএব মুমিনরা যেন আল্লাহ্‌র ওপর ভরসা করে।”[সূরা মুজাদালা, আয়াত: ১০]

আপনি সন্তুষ্টির স্তরে পৌঁছতে পারবেন এভাবে যে, আপনি যদি সবসময় চিন্তা করেন যে, এটি আল্লাহ্‌ লিখে রেখেছেন। এটি ঘটতই ঘটত। দুঃখ করলেও এই মুসিবত দূর হবে না। বরং আরও বাড়বে।

যদি সবসময় আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির সওয়াবের চিন্তা মাথায় রাখেন। “যে ব্যক্তি সন্তুষ্ট হয় তার জন্য রয়েছে সন্তুষ্টি”। আল্লাহ্‌ তার বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হওয়ার চেয়ে মহান আর কিছু নেই।

আপনি আপনার বাবার জন্য যে দোয়াটি করেন সেটি একটি ভালো দোয়া। আমরা আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আপনার দোয়া কবুল করেন এবং আপনাকে যে মুসিবতে আক্রান্ত করেছেন এর উত্তম বদলা দেন।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.