পাত্রীর পরিবারে কারো কারো সন্তান হচ্ছে না— বিয়ের প্রস্তাবকারী ছেলেকে এ কথা অবহিত করা কি আবশ্যক?

প্রশ্ন আমার ভাই বিয়ে করতে চাচ্ছে। আমার মা তার জন্য একটি মেয়ে দেখেছে। উভয় পক্ষ বিয়েতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু শরিয়তসম্মত দেখাসাক্ষাতের পর এবং উভয় পক্ষের সম্মতির পর আমরা জানতে পারলাম যে, মেয়ের কোন কোন ফুফুর সন্তান হচ্ছে না। আর যে ফুফুদের সন্তান হয়েছে তাদের মেয়েদের সন্তান হচ্ছে না। এখন আমাদের ভাইকে এ বিষয়টি জানানো কি…

প্রশ্ন

আমার ভাই বিয়ে করতে চাচ্ছে। আমার মা তার জন্য একটি মেয়ে দেখেছে। উভয় পক্ষ বিয়েতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু শরিয়তসম্মত দেখাসাক্ষাতের পর এবং উভয় পক্ষের সম্মতির পর আমরা জানতে পারলাম যে, মেয়ের কোন কোন ফুফুর সন্তান হচ্ছে না। আর যে ফুফুদের সন্তান হয়েছে তাদের মেয়েদের সন্তান হচ্ছে না। এখন আমাদের ভাইকে এ বিষয়টি জানানো কি আবশ্যক? যদি আমরা এ কথা না বলি তাহলে কি আমরা গুনাহগার হব? আমরা জানি যে, সন্তান হওয়াটা আল্লাহ্‌র হাতে। কিন্তু আমাদের ভাইকে এ বিষয়টি জানানোটা কি আবশ্যক; নাকি আমরা তাকে জানাব না— যাতে করে আমরা তাকে সন্দেহ ও ভয়ের মধ্যে ফেলে না দিই।

আমার ভাই বিয়ে করতে চাচ্ছে। আমার মা তার জন্য একটি মেয়ে দেখেছে। উভয় পক্ষ বিয়েতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু শরিয়তসম্মত দেখাসাক্ষাতের পর এবং উভয় পক্ষের সম্মতির পর আমরা জানতে পারলাম যে, মেয়ের কোন কোন ফুফুর সন্তান হচ্ছে না। আর যে ফুফুদের সন্তান হয়েছে তাদের মেয়েদের সন্তান হচ্ছে না। এখন আমাদের ভাইকে এ বিষয়টি জানানো কি আবশ্যক? যদি আমরা এ কথা না বলি তাহলে কি আমরা গুনাহগার হব? আমরা জানি যে, সন্তান হওয়াটা আল্লাহ্‌র হাতে। কিন্তু আমাদের ভাইকে এ বিষয়টি জানানোটা কি আবশ্যক; নাকি আমরা তাকে জানাব না— যাতে করে আমরা তাকে সন্দেহ ও ভয়ের মধ্যে ফেলে না দিই।

আলহামদু লিল্লাহ।.

সন্তান হওয়ার বিষয়টি আল্লাহ্‌র হাতে। যেমনটি আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন: “আসমান ও জমিনের রাজত্ব একমাত্র আল্লাহ্‌র। তিনি যা চান তাই সৃষ্টি করেন। যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন, অথবা তাদেরকে পুত্র ও কন্যা উভয়ই দান করেন। আবার যাকে ইচ্ছা নিঃসন্তান রাখেন। নিশ্চয়ই তিনি মহাজ্ঞানী, সর্বশিক্তমান।”[সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ৪৯, ৫০]

এক বাড়ীতে কারো সন্তান হয়; কারো সন্তান হয় না। সন্তান না-হওয়ার কারণ কখনও পুরুষের পক্ষ থেকে হতে পারে কিংবা মহিলার পক্ষ থেকে হতে পারে।

আপনি ফুফুদের কথা উল্লেখ করেছেন; কিন্তু বোনদের কথা, খালাদের কথা কিংবা চাচাতো বোনদের কথা উল্লেখ করেননি।

যেহেতু পাত্রীর দ্বীনদারিতা ও চরিত্র সন্তোষজনক এবং পাত্র এতে সন্তুষ্ট; সুতরাং এটি উল্লেখ করা অনুচিত। যেহেতু এতে বিয়ে ভেঙ্গে যেতে পারে কিংবা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা চলমান থাকতে পারে।

কিন্তু যদি অধিকাংশ আত্মীয়-স্বজনের বাচ্চা না হয় কিংবা এ বিষয়টি প্রকাশ্য ও সবার মাঝে জানাশুনা হয়: সেক্ষেত্রে আপনাদের ভাইকে অবহিত করা আবশ্যক; যাতে করে বিষয়টি তার জানা থাকে।

শরিয়ত অধিক সন্তানপ্রসবকারিনী নারীকে বিয়ে করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে। মা’কিল বিন ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন: এক লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলল: ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! আমি এমন একজন নারী পেয়েছি, যে বংশধরা ও সুন্দরী; কিন্তু তার সন্তান হয় না— আমি কি এ নারীকে বিয়ে করব? তিনি তখন তাকে বারণ করলেন। এরপর তার কাছে দ্বিতীয় এক নারীর প্রস্তাব আসল। তখনও সে একই ধরণের কথা বলল এবং তিনি তাকে বারণ করলেন। এরপর তার কাছে তৃতীয় এক নারীর প্রস্তাব আসল। তখনও সে একই ধরণের কথা বলল। তখন তিনি বললেন: তোমরা প্রেমময়ী ও অধিক সন্তানপ্রবসকারিনী নারী বিয়ে কর। কেননা আমি তোমাদের আধিক্য নিয়ে গৌরব করব।”[সুনানে আবু দাউদ (২০৫০), সুনানে নাসাঈ (৩২২৭), আলবানী হাদিসটিকে ‘আদাবুয যাফাফা’ গ্রন্থে (পৃষ্ঠা-১৩২) সহিহ বলেছেন]

ফিকাহবিদ আলেমগণ উল্লেখ করেছেন যে, কোন নারীর অধিক সন্তান হবে কিনা এটি তার আত্মীয়স্বজনকে দেখার মাধ্যমে জানা যায়।

‘কাশ্‌শাফুল ক্বিনা’ গ্রন্থে (৫/৯) এসেছে: “কোন কুমারী মেয়ে অধিক সন্তানধারী হবে কিনা এটি তার নারী আত্মীয়স্বজনদের অধিক সন্তান হওয়ার মাধ্যমে জানা যায়।”[সমাপ্ত]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.