সান্ত্বনা দানের বিধিবিধান

প্রশ্ন সান্ত্বনা দেয়া বলতে কি বুঝায়? এর পদ্ধতিগুলো কি কি? এর সময় কখন? সান্ত্বনা দেয়া বলতে কি বুঝায়? এর পদ্ধতিগুলো কি কি? এর সময় কখন? আলহামদু লিল্লাহ।. সান্ত্বনা দেয়া মানে: বিপদগ্রস্তকে প্রবোধ দেয়া ও বিপদ মোকাবিলায় তার শক্তি সঞ্চার করা। বিপদগ্রস্ত: প্রত্যেক এমন ব্যক্তি যিনি কোন বিপদে আক্রান্ত; চাই প্রিয়জন হারানো হোক, নিকটাত্মীয়কে হারানো হোক,…

প্রশ্ন

সান্ত্বনা দেয়া বলতে কি বুঝায়? এর পদ্ধতিগুলো কি কি? এর সময় কখন?

সান্ত্বনা দেয়া বলতে কি বুঝায়? এর পদ্ধতিগুলো কি কি? এর সময় কখন?

আলহামদু লিল্লাহ।.

সান্ত্বনা দেয়া মানে: বিপদগ্রস্তকে প্রবোধ দেয়া ও বিপদ মোকাবিলায় তার শক্তি সঞ্চার করা।

বিপদগ্রস্ত: প্রত্যেক এমন ব্যক্তি যিনি কোন বিপদে আক্রান্ত; চাই প্রিয়জন হারানো হোক, নিকটাত্মীয়কে হারানো হোক, কিংবা সম্পদ হারানো হোক। মৃতব্যক্তির পরিবার, বন্ধুবান্ধব বা প্রতিবেশী সকলকে সান্ত্বনা দেয়া যায়।

সান্ত্বনা দেয়া যায় এমন কিছুর মাধ্যমে যাতে বিপদগ্রস্তের জন্য প্রবোধ রয়েছে, তার দুঃখের লাঘব রয়েছে। সান্ত্বনা দেয়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে। যখন তাঁর কোন এক মেয়ে তার ছেলের মৃত্যুর খবর জানিয়ে তাঁকে যাওয়ার জন্য লোক পাঠিয়েছিলেন তখন তিনি বলেছিলেন: তুমি ফিরে গিয়ে তাকে বল: আল্লাহ্‌ যা নিয়েছেন তা নেয়ার অধিকার তাঁর; আর যা দিয়েছেন তা দেয়ার অধিকারও তাঁর। তাঁর কাছে সবকিছুর নির্দিষ্ট আয়ু রয়েছে। তাকে ধৈর্য ধারণ করা ও সওয়াবপ্রাপ্তির নিয়ত করার নির্দেশ দাও।[সহিহ বুখারী (১২০৪)]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছি: সান্ত্বনা দেয়ার পদ্ধতি কি?

জবাবে তিনি বলেন: “সান্ত্বনা দেয়ার সর্বোত্তম ভাষা যে ভাষায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কোন এক মেয়েকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন যখন সে তার ছেলে বাচ্চা বা মেয়ে বাচ্চার মৃত্যুতে তাঁকে ডেকে আনার জন্য লোক পাঠিয়েছিলেন। তখন তিনি সেই লোককে বললেন: তাকে ধৈর্য ধারণ করা ও সওয়াবের নিয়ত করার নির্দেশ দাও। কারণ নিশ্চয় আল্লাহ্‌ যা নিয়েছেন তা নেয়ার অধিকার তার এবং যা দিয়েছেন তা দেয়ার অধিকারও তাঁর। আর তাঁর কাছে সবকিছুর একটি নির্দিষ্ট আয়ু রয়েছে।

পক্ষান্তরে, মানুষের মাঝে যে কথাটি ব্যাপক মশহুর হয়ে পড়েছে: عظَّم اللهُ أجرَك، وأحْسَنَ اللهُ عَزاءَك، وغَفَرَ اللهُ لِمَيِّتِك (আল্লাহ্‌ আপনাদের প্রতিদানকে মহান করুন, আপনাদের ধৈর্যকে সুন্দর করুন এবং আপনাদের মৃতব্যক্তিকে ক্ষমা করুন)। এটি কোন এক আলেমের নির্বাচিত ভাষ্য। তবে সুন্নাতে যা উদ্ধৃত হয়েছে সেটাই উত্তম।”[মাজমুউ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন (১৭/৩৩৯)]

দাফনের পর ও দাফনের পূর্বে সান্ত্বনা দেয়া জায়েয। কেউ যদি মৃতের পরিবারকে মৃতের দাফন, গোসল কিংবা জানাযার নামাযের পূর্বে সান্ত্বনা দেয় এতে কোন অসুবিধা নেই, এর মাধ্যমে উদ্দেশ্য হাছিল হবে। আর যদি দাফনের পর সান্ত্বনা দেয় এতেও কোন অসুবিধা নাই।

শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: সান্ত্বনা দেয়ার সময় কখন?

জবাবে তিনি বলেন: “সান্ত্বনা দেয়ার সময় মৃতব্যক্তির মৃত্যুর পর কিংবা বিপদটি ঘটার পর থেকে বিপদটি ভুলে যাওয়া পর্যন্ত এবং বিপদগ্রস্তের মন থেকে মুছে যাওয়া পর্যন্ত; যদি বিপদটি মৃত্যু ছাড়া অন্য কোন বিপদ হয়। কেননা সান্ত্বনা দ্বারা উদ্দেশ্য শুভেচ্ছাজ্ঞাপন বা অভিবাদন নয়। বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে বিপদগ্রস্তকে বিপদটি মোকাবিলায় ও সওয়াবের নিয়ত করার শক্তি যোগানো।”[মাজমুউ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন (১৭/২৪০)]

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.