পিতামাতার সাথে একজন মুসলিমের সদাচরণের পদ্ধতি

প্রশ্ন আমার সমস্যাটির সারাংশ হলো: আমার পিতামাতা সার্বক্ষণিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত থাকেন। কারণ আমার পিতা কর্কশ ও আক্রমনাত্মক আচরণের মানুষ। তাঁর ব্যক্তিত্ব অবোধ্য, অর্ন্তমুখী ও রূক্ষ।আমি ও আমার ভাইয়েরা তাঁকে খুব ভয় পাই। আমরা তাঁর সাথে একেবারে অগভীর পর্যায়ে ছাড়া কোন প্রকার সংলাপ করতে যাই না। আমি আমার প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে ভালোবাসি; যাতে করে আমি জান্নাত…

প্রশ্ন

আমার সমস্যাটির সারাংশ হলো: আমার পিতামাতা সার্বক্ষণিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত থাকেন। কারণ আমার পিতা কর্কশ ও আক্রমনাত্মক আচরণের মানুষ। তাঁর ব্যক্তিত্ব অবোধ্য, অর্ন্তমুখী ও রূক্ষ।আমি ও আমার ভাইয়েরা তাঁকে খুব ভয় পাই। আমরা তাঁর সাথে একেবারে অগভীর পর্যায়ে ছাড়া কোন প্রকার সংলাপ করতে যাই না। আমি আমার প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে ভালোবাসি; যাতে করে আমি জান্নাত লাভে ধন্য হই। আমি পিতামাতার সাথে সদাচরণের গুরুত্ব সম্পর্কে পড়েছি। এ কারণে আমি চরম পেরেশানিতে আছি যে, কিভাবে আমি আমার পিতার সাথে সদাচরণ করতে পারি; আমি এর কোন রাস্তা জানি না?

আমার সমস্যাটির সারাংশ হলো: আমার পিতামাতা সার্বক্ষণিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত থাকেন। কারণ আমার পিতা কর্কশ ও আক্রমনাত্মক আচরণের মানুষ। তাঁর ব্যক্তিত্ব অবোধ্য, অর্ন্তমুখী ও রূক্ষ।

আমি ও আমার ভাইয়েরা তাঁকে খুব ভয় পাই। আমরা তাঁর সাথে একেবারে অগভীর পর্যায়ে ছাড়া কোন প্রকার সংলাপ করতে যাই না। আমি আমার প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে ভালোবাসি; যাতে করে আমি জান্নাত লাভে ধন্য হই। আমি পিতামাতার সাথে সদাচরণের গুরুত্ব সম্পর্কে পড়েছি। এ কারণে আমি চরম পেরেশানিতে আছি যে, কিভাবে আমি আমার পিতার সাথে সদাচরণ করতে পারি; আমি এর কোন রাস্তা জানি না?

আলহামদু লিল্লাহ।.

আল্লাহ্‌ তাআলা তাঁর ইবাদতের নির্দেশ দেয়ার বিষয়টির সাথে পিতামাতার প্রতি সদাচরণের বিষয়টি একত্রে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন: “আর আপনার প্রভু আদেশ দিয়েছেন তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত না করতে ও পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে।”[সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত: ২৩]

তিনি আরও বলেন: “আর তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর ও কোনো কিছুকে তাঁর শরীক করো না; এবং পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণ করো।”[সূরা নিসা, আয়াত: ৩৬]

এটি পিতামাতার প্রতি সদাচরণ ও সদ্ব্যবহারের গুরুত্বের দলিল।

পিতামাতার সাথে সদাচরণ করা হবে তাদের আনুগত্য করার মাধ্যমে, সম্মান ও মর্যাদা দেয়া, তাদের জন্য দোয়া করা, তাদের সামনে কণ্ঠস্বর নীচু রাখা, তাদের সাথে হাসিমুখে কথা বলা, তাদের সাথে বিনয়ী হওয়া, তাদের সাথে বিরক্তি প্রকাশ না-করা, তাদের সেবা করা, তাদের আকাঙ্ক্ষাগুলোকে বাস্তবায়ন করা, তাদের সাথে পরামর্শ করা, তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনা, তাদের সাথে হটকারিতা না-করা, তাদের জীবদ্দশায় ও তাদের মৃত্যুর পর তাদের বন্ধুকে সম্মান করা ইত্যাদির মাধ্যমে।

এর মধ্যে আরও রয়েছে তাদের অনুমতি ছাড়া সফর না করা, তাদের চেয়ে উপরের কোন স্থানে না-বসা, তাদের সামনে খাবারের দিকে পা দিয়ে না-বসা, নিজের স্ত্রী ও সন্তানকে তাদের উপর প্রাধান্য না-দেয়া।

অনুরূপভাবে তাদের প্রতি সদাচরণের মধ্যে রয়েছে: তাদেরকে দেখতে যাওয়া, তাদেরকে উপহার দেয়া, তাদের প্রতিপালনের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা; ছোটবেলায় হোক বা বড় হওয়ার পর হোক।

অনুরূপভাবে তাদের সদাচরণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত: তাদের উভয়ের মাঝে মতভেদ কমানোর চেষ্টা করা। সেটা সাধ্যানুযায়ী উত্তম উপদেশ ও আখিরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার মাধ্যমে এবং উভয়ের মধ্যে যিনি মজলুম তার পক্ষে ওজর পেশ করার মাধ্যমে এবং ভাল কথা ও কাজের মাধ্যমে তার মনকে ভালো করার মাধ্যমে।

আপনার পিতার আচরণ যেটাই হোক না কেন আপনি পূর্বোক্ত শিষ্টচারগুলোতে ভূষিত হোন। যা কিছু আপনার পিতার রাগের উদ্রেক করে বা তাকে ব্যথিত করে সেগুলো পরিহার করুন; যদি না এতে কোন গুনাহ বা আল্লাহ্‌র অবাধ্যতা না বর্তায়। কারণ আল্লাহ্‌র অধিকার সকল বান্দাদের অধিকারের উপর প্রাধান্যযোগ্য।

আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করুন যেন তিনি তাঁদেরকে হেদায়েত দেন, তাঁদের অবস্থা সংশোধন করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, নিকটবর্তী ও দোয়া কবুলকারী।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *