সেজদা অবস্থায় যে ব্যক্তি ভূমি থেকে হাত তুলে চামড়া চুলকালো তার নামায কি বাতিল?

প্রশ্ন যদি কেউ সেজদাকালে তার হাত কিংবা পা উপরে তুলে ফেলে; পরে ভূমিতে রাখে ও সেজদা সম্পন্ন করে এতে করে তার নামায কি বাতিল হয়ে যাবে? উদাহরণতঃ এক লোকের সেজদা অবস্থায় চামড়া চুলকানোর প্রয়োজন হল বিধায় সে একহাত উপরে তুলেছে। এতে করে তার নামায কি বাতিল? যদি এ কাজটি সে ভুলে গিয়ে করে তাহলেও কি…

প্রশ্ন

যদি কেউ সেজদাকালে তার হাত কিংবা পা উপরে তুলে ফেলে; পরে ভূমিতে রাখে ও সেজদা সম্পন্ন করে এতে করে তার নামায কি বাতিল হয়ে যাবে? উদাহরণতঃ এক লোকের সেজদা অবস্থায় চামড়া চুলকানোর প্রয়োজন হল বিধায় সে একহাত উপরে তুলেছে। এতে করে তার নামায কি বাতিল? যদি এ কাজটি সে ভুলে গিয়ে করে তাহলেও কি তার নামায বাতিল হয়ে যাবে এবং পুনরায় আদায় করা আবশ্যক হবে?

যদি কেউ সেজদাকালে তার হাত কিংবা পা উপরে তুলে ফেলে; পরে ভূমিতে রাখে ও সেজদা সম্পন্ন করে এতে করে তার নামায কি বাতিল হয়ে যাবে? উদাহরণতঃ এক লোকের সেজদা অবস্থায় চামড়া চুলকানোর প্রয়োজন হল বিধায় সে একহাত উপরে তুলেছে। এতে করে তার নামায কি বাতিল? যদি এ কাজটি সে ভুলে গিয়ে করে তাহলেও কি তার নামায বাতিল হয়ে যাবে এবং পুনরায় আদায় করা আবশ্যক হবে?

আলহামদু লিল্লাহ।.

সাতটি অঙ্গের উপর সেজদা করা আবশ্যক। যে অঙ্গগুলোর উপর সেজদা করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আদেশ দিয়েছেন। সহিহ বুখারী (৮১২) ও সহিহ মুসলিম (৪৯০)-এ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আমাকে শরীরের সাতটি হাড়ের উপর সেজদা করার আদেশ দেয়া হয়েছে: কপালের উপর, তিনি হাত দিয়ে নাকের দিকে ইশারা করেন, দুই হাত, দুই হাঁটু ও পায়ের পাতার অগ্রভাগের উপর”।

ইমাম নববী (রহঃ) সহিহ মুসলিমের ব্যাখ্যায় (৪/২০৮) বলেন: “যদি এগুলোর মধ্য থেকে কোন একটি অঙ্গ দিয়ে সেজদা না করে তাহলে তার নামায সহিহ হবে না।”[সমাপ্ত]

জমহুর (অধিকাংশ) আলেম (এদের মধ্যে ইমাম মালেক, শাফেয়ি ও আহমাদ রয়েছেন) এ হাদিস দিয়ে দলিল দেন যে, যদি এ সমস্ত অঙ্গগুলোর উপর সেজদা করা না হয় তাহলে সেজদা সহিহ হবে না। তাই কেউ যদি ছয়টি অঙ্গের উপর সেজদা করে তার সেজদা সহিহ হবে না।

ইবনে রজব হাম্বলি “ফাতহুল বারী” গ্রন্থে বলেন: “এ অভিমতের পক্ষে প্রমাণ বহন করে এ সহিহ হাদিসগুলো; যেগুলো এ সমস্ত অঙ্গগুলোর উপর সেজদা দেয়ার নির্দেশ বহন করে। নির্দেশ দেয়া হয় আবশ্যকতা বুঝানোর জন্য।”[সমাপ্ত][ইবনে রজব রচিত ‘ফাতহুল বারী’ (৫/১১৪-১১৫)]

অতএব, যে ব্যক্তি সেজদাকালীন সম্পূর্ণ সময় সেজদার কোন একটি অঙ্গ ভূমি থেকে উপরে তুলে রাখে এবং ঐ অঙ্গের উপর সেজদা না করে তার নামায শুদ্ধ নয়। আর যদি সামান্য সময়ের জন্য উপরে তোলে তাহলে ইনশা আল্লাহ তার নামায সহিহ।

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: এক লোক সেজদাকালে সেজদার কোন একটি অঙ্গ উপরে তুলে রেখেছে তার নামায কি বাতিল?

জবাবে তিনি বলেন: “যে অভিমতটি অগ্রগণ্য প্রতীয়মান হয় সেটা হল: যদি সেজদার পুরো সময়টা উপরে তুলে রাখে অর্থাৎ যতক্ষণ সেজদাতে ছিল ততক্ষণই উপরে তুলে রেখেছে তাহলে তার সেজদা বাতিল। যদি তার সেজদা বাতিল হয় তাহলে তার নামাযও বাতিল। আর যদি স্বল্প সময়ের জন্য তুলে রাখে যেমন: অন্য কোন পা চুলকানোর জন্য; এরপর সস্থানে ফিরিয়ে নেয় তাহলে আশা করি এতে কোন অসুবিধা নাই।”[সমাপ্ত][লিকাআতুল বাবিল মাফতুহ]

তিনি আরও বলেন:

“এ সাতটি অঙ্গের উপর সেজদার সম্পূর্ণ সময় সেজদা করা ওয়াজিব। অর্থাৎ সেজদাকালে এ অঙ্গগুলোর কোন একটি অঙ্গ উপরে উঠানো জায়েয নয়; হাত নয়, পা নয়, নাক নয়, কপাল নয়, এ অঙ্গগুলোর কোনটিই নয়। যদি কেউ উপরে উঠায়: তাহলে সে যদি সেজদার পুরা সময়টা উপরে তুলে রাখে তাহলে নিঃসন্দেহে তার সেজদা সহিহ নয়। কেননা সে ব্যক্তি যে অঙ্গগুলোর উপর সেজদা করা ওয়াজিব সে অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি অঙ্গের ঘাটতি করেছে। আর যদি সেজদার মাঝখানে উপরে উঠায়; উদাহরণতঃ এক লোকের পা চুলকাচ্ছে; ধরে নিই সে ব্যক্তি এক পা দিয়ে অপর পা চুলকালো; তাহলে এ ব্যাপারে ইজতিহাদের অবকাশ আছে। কেউ বলতে পারেন: তার নামায সহিহ নয়। যেহেতু সে সেজদার কিছু অংশে এ রুকনটি পালন করেনি। আবার কেউ বলতে পারেন: তার সেজদা আদায় হয়ে গেছে। যেহেতু ধর্তব্য হচ্ছে বেশিরভাগ অংশ। যদি সেজদার বেশির অংশে সে ব্যক্তি সাতটি অঙ্গের উপর সেজদা করে থাকে তাহলে সেজদা আদায় হয়ে গেছে।

এই আলোচনার প্রেক্ষিতে সর্তকতা হল: সেজদার কোন অঙ্গ উপরে না তুলে ধৈর্য রাখা। এমনকি তার যদি হাত চুলকায়, রানে চুলকায়, পায়ে চুলকায় তাহলে সে ব্যক্তি সেজদা থেকে দাঁড়ানো পর্যন্ত ধৈর্য রাখবে।”[সমাপ্ত][আল-শারহুল মুমতি (৩/৩৭)]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.